নানা সংকটেও জার্মানিতে গণতন্ত্রে আস্থার হার বেড়েছে: জরিপ

সংগৃহীত ছবি

নানা সংকটেও জার্মানিতে গণতন্ত্রে আস্থার হার বেড়েছে: জরিপ

অনলাইন ডেস্ক

নানা ধরনের সংকট সত্ত্বেও জার্মানিতে গণতন্ত্র এখনো শক্তিশালী। এ সংক্রান্ত একটি জরিপের ফল রাজনৈতিক বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতি নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়েই যাচ্ছে।

সদ্য প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফল অনুসারে, জার্মানিতে বসবাসকারী প্রায় অর্ধেক মানুষ গণতন্ত্রের পরিস্থিতি নিয়ে মোটামুটি বা বেশ সন্তুষ্ট।

অন্যদিকে অর্ধেকের বেশি মানুষ কম সন্তুষ্ট বা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তাহলে পানির গ্লাস কি অর্ধেক ভরা নাকি অর্ধেক খালি? ‘ট্রাস্ট ইন ডেমোক্রেসি ইন টাইমস অব ক্রাইসিস’ শিরোনামে এই জরিপটি পরিচালনা করেছে সামাজিক গণতন্ত্রীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থিংক ট্যাংক ফ্রিডরিখ এবার্ট ফাউন্ডেশন (এফইএস)।

এফইএসের নির্বাহী পরিচালক সাবিনে ফান্ডরিশ জরিপের ফলকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছেন। তার মতে, গণতন্ত্র আরো ভালো এবং আরো দৃঢ়ভাবে কাজ করছে, ‘একাধিক সংকটের মধ্যেও, যা কেউ আশা করেনি।

২০১৯ সালে এই ধরনের প্রথম সমীক্ষার তুলনায় গণতন্ত্রে আস্থার হার কিছুটা বেড়েছে। তখন গণতন্ত্রে আস্থা ছিল ৪৬.৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর, এখন তা বেড়ে ৪৮.৭ শতাংশ হয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি অসন্তুষ্ট, সেটিও অস্বীকারের উপায় নেই।

জরিপে দেখা গেছে, স্বল্পশিক্ষিত এবং অল্প আয়ের মানুষদের মধ্যে গণতন্ত্রে আস্থাহীনতা বেশি। পাশাপাশি পশ্চিম জার্মানির তুলনায় পূর্ব জার্মানিতে বসবাসকারীদের মধ্যে গণতন্ত্রে আস্থার হার তুলনামূলক কম। ফান্ডরিশ সামাজিক সংহতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন, জনগণের মধ্যে নানা সংকটের সহজ উত্তর পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, এটি পপুলিস্টদের জন্য একটি সুযোগ। ’

সামগ্রিক ফল মিশ্র হলেও রাজনীতি বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ডেকারের নেতৃত্বে গবেষকেরা জরিপে পাওয়া ইতিবাচক দিকগুলোর ওপরও জোর দিয়েছেন। তার মতে, ‘যদি আমরা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করি, তবে আমরা জার্মানিতে বেশ ভালো করছি। ’

এ প্রসঙ্গে ডেকার অতি-ডানপন্থী দল পপুলিস্ট অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি-এএফডির ভোটের ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করেন। দলটি সম্প্রতি জার্মানিজুড়ে গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে নিতে পেরেছে। কিন্তু একই ধরনের দল ইউরোপের অন্য নানা দেশে ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রিডম পার্টি অব অস্ট্রিয়া দেশটির নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ডেকার বলেন, ‘সেখানকার মানুষ গণতন্ত্রের টিকে থাকা নিয়েই অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। ’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট জিতেছেন কট্টর ডানপন্থি প্রার্থী মারি লঁ পেন। ডেকার বলেন, ‘ইতালিতে একটি ডানপন্থী সরকার গঠিত হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন একজন পোস্ট-ফ্যাসিস্ট। ’

ডেকার মনে করেন, এই জরিপের ফলে বোঝা যায় যে জার্মানি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো গভীর সামাজিক বিভাজন জার্মানিতে নেই।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

এই রকম আরও টপিক