সুদানে এখনো যারা আটকে আছেন তাদেরও ফেরত আনা হবে: প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

সুদানে এখনো যারা আটকে আছেন তাদেরও ফেরত আনা হবে: প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন ১৩৬ বাংলাদেশি। সোমবার (৮ মে) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাদের নিয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানটি। বাকি যারা এখনো সুদানে আছেন, তাদের ফিরিয়ে আনতে পারবেন বলে এ সময় আশা ব্যক্ত করেনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

তিনি বলেন, ৯ বা ১০ তারিখ আরেকটি ফ্লাইট আসছে পারে।

নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এখনো সুদানে কোনো বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর নেই।  

বিমানবন্দরে আসার পর তাদের স্বাগত জানান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ফেরত আনার বিষয়ে আইওএম সহায়তা করছে।

তারা খালি হাতে ফিরেছেন। পুনর্বাসনে সহায়তা করার পাশাপাশি অন্যদেশে যেতে চাইলে সহায়তা করা হবে।  

এ সময় সুদান থেকে ফিরে আসাদের কিছু আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়।

এদিকে, বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও যারা সুদানে আটকা পড়েছেন প্রয়োজনে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হবে।  

যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে ১৩৬ বাংলাদেশি সৌদি এয়ারফোর্সের বিশেষ তিনটি বিমানে করে গতকাল জেদ্দা পৌঁছান। তখন এসব বাংলাদেশিদের জেদ্দা বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এসময় জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৩ মে সুদানে আটকে পড়া ৬৫০ বাংলাদেশি দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান বন্দরে পৌঁছান। ওই দিন সকালে তাদের বহনকারী ১৩টি বাস বন্দরে পৌঁছায়। আগের দিন ২ মে বাসগুলো ৬৫০ বাংলাদেশিকে নিয়ে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বন্দরে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। এক্ষেত্রে নতুন করে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হয়।

জানা গেছে, পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফেরার জন্য ৬৭৫ বাংলাদেশি অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না। তবে জাহাজ না পাওয়ায় বিমানযোগে ১৩৫ জনকে জেদ্দায় নেওয়া হয়।

আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০- এর বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মী ও মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির বাস। যুদ্ধকালীন প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরমধ্যে আটকে পড়া ৬৭৫ জন বাংলাদেশিকে গত ৩ মে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে আনা হয়।

এদিকে চলমান যুদ্ধে সুদানে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আরও আগেই তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।

news24bd.tv/আইএএম