নির্বাচনে অনুপস্থিত হলেও ষড়যন্ত্রের মাঠে সরব বিএনপি : পরশ

ফাইল ছবি

নির্বাচনে অনুপস্থিত হলেও ষড়যন্ত্রের মাঠে সরব বিএনপি : পরশ

বিএনপি নির্বাচনের মাঠে অনুপস্থিত হলেও ষড়যন্ত্রের মাঠে উপস্থিত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার প্রতিনিধিবৃন্দের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, রাজনীতিতে আনুগত্য ও শৃঙ্খলা বিরাট ব্যাপার। নৌকা কিসের প্রতীক? নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, নৌকা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক, নৌকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক।

নৌকার সম্মান রাখার জন্য ঐক্য আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আমাদের নৌকার মান সমুন্নত রাখার শপথ নিতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ বা আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থ ভুলে এখন আমাদের নৌকাকে তুলে ধরতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার সময় পরে পাবেন।
এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচন একটা গতি একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করবে। আমাদের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মনোবল বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া একটা স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণে গাজীপুরের এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচনটা এমন একটা সময় হচ্ছে, মাত্র ৬ মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গাজীপুর এই নির্বাচনে নৌকার জয় জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করে।

পরশ বলেন, সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার, শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানের মতো একজন সজ্জন প্রার্থী আমরা পেয়েছি। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত নগর গঠনে আজমত উল্লাহ খান সাহেবের বিকল্প নাই। অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ সাহেবের সবচেয়ে বড় শক্তি তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি। তৃণমূলে সাধারণের সঙ্গে মিলেমিশে থাকায় গাজীপুরে আজমত উল্লাহ সাহেবের সততা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতার কারণে একটা নিজস্ব অবস্থান রয়েছে, যা নৌকার প্রার্থীকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে আমাদের প্রধান শক্তি আমাদের প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজ। গাজীপুরে আজমত উল্লাহর পারিবারিক ঐতিহ্য, তার সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজেই মিশে যাওয়ার অনন্য গুণাবলির কারণে তার ব্যক্তিগত ভোট ব্যাংক রয়েছে। এই ব্যক্তিগত ভোট ব্যাংক আজমত উল্লাহ সাহেবের জয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনকে হাল্কা করে নেওয়ার কোনো অবকাশ নাই। বিএনপি নির্বাচনের মাঠে অনুপস্থিত হলেও ষড়যন্ত্রের ময়দানে তারা কিন্তু সক্রিয়ভাবে উপস্থিত। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য এবং প্রতিযোগিতামূলক একটা নির্বাচন হবে। তারা ছদ্মবেশে আমাদের প্রার্থীদের হারাতে চেষ্টা করবে, তারা ডামি প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করছে। সরাসরি নির্বাচনে যাওয়ার তাদের সাংগঠনিক ভিত্তি নাই। তাছাড়া কোনো মুখ নিয়ে নিয়ে আগুন সন্ত্রাসীরা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যাবে? তাই তারা এই পেছনের দরজার পথ বেছে নিয়েছে। তবে এই নির্বাচনে জয়লাভ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিএনপি-জামাত সঙ্গবদ্ধ হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে, যদি নৌকা পরাজিত হয়। একই সাথে, বিএনপি মনোবল ফেরত পাবে। গাজীপুর এমন একটা ভৌগলিক এলাকায় অবস্থান করে যেখান থেকে সরকারকে বিব্রত করা অনেক সহজ। সে কারণে এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। সেকারণেই এই নির্বাচনকে জীবন-মরণ যুদ্ধ হিসেবে নিতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীরবিক্রম) বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে একটি স্মার্ট ও আধুনিক সিটি কর্পোরেশন হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে, নাগরিকদের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আপনাদের সবার প্রিয়নেতা অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে মনোনয়ন দিয়েছেন। যুবলীগের ভাইদেরকে বলব আগামী ২৫ মে পর্যন্ত আপনারা দিনরাত পরিশ্রম করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। নৌকাকে বিজয় করে ঘরে ফিরবেন। এছাড়াও যারা নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তাদেরকেও কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল বলেন, আজকে সারা বিশ্ব বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে। শুধু তাই নয় যে ওয়াল্ড ব্যাংক বলেছিল পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে সেটা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা বাঙালির নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সেই সেতুর ক্রেচ ওয়াল্ড ব্যাংকের সভাপতিকে সম্প্রতি উপহার দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের সাইন বোর্ড ব্যবহার করে নিজেদের ভাগ্য ঘুরেছেন, তারা যদি নৌকার বিরোধিতা করে, তাদেরকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান বলেন, যুবলীগ যে কোনো ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে ছিল। আমার সাথে যুবলীগের দুই জন মেয়র পদপ্রার্থী ছিল। মাননীয় নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে যুবলীগের প্রার্থীরা সব কিছু ভুলে আমার কাছে ছুটে এসেছে। এখন তারা মাঠে নৌকার পক্ষে দিনরাত পরিশ্রম করছে, এটাই যুবলীগ।

তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন আপনাদের নির্বাচন। এই নির্বাচন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের নির্বাচন। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা প্রত্যেকটি ভোটারের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সালাম পৌঁছে দিবেন। শেখ হাসিনার উন্নয়নের রোল মডেল মানুষের কাছে তুলে ধরবেন। আগামী ২৫ মে, নৌকার বিজয় নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

পরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে একটি প্রতীকী মিছিল বের করা হয়।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

news24bd.tv/FA/towhid