সত্যি হলো ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলার ভবিষৎবাণীই। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ খেলতে যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হবে ম্যানচেস্টারে। ’ অর্থাৎ, দ্বিতীয় লেগে ফয়সালা হবে, কারা পাচ্ছে ইস্তাম্বুলের টিকিট। তার সেই ভবিষৎবাণীকে সত্যি করে দ্বিতীয় লেগের জন্য সব তুলে রাখলো রিয়াল-সিটি।
ম্যাচ সমতায় শেষ হলেও, উত্তেজনার কোনো কমতি ছিল না এ ম্যাচকে ঘিরে। ছিল রোমাঞ্চ, বিতর্ক। বার্নাব্যুতে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার পর থেকেই বলের দখল নিয়ে নেয় সিটিজেনরা।
বল দখলে দাপটের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নিচ্ছিলেন রদ্রি-কেভিন ডি ব্রুইনারা। তবে থিবো কোর্তোয়ার বিশ্বস্ত হাত বাঁচিয়ে দিচ্ছিল রিয়ালকে। ১৮ মিনিটে গিয়ে প্রথম আক্রমণে ওঠে রিয়াল। করিম বেনজেমা অবশ্য সফল হতে পারেননি।
তবে ৩৫ মিনিটে আচমকাই বার্নাব্যু কাঁপিয়ে দেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। নিজেদের রক্ষণ থেকে লুকা মদ্রিচের সঙ্গে দারুণ বল নেওয়া করে উঠে আসা এদোয়ার্দো কামাভিঙ্গার পাস থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে অবিশ্বাস্য বুলেট গতির শটে বল জালে জড়ান এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। তার গোলে জেগে ওঠে বার্নাব্যু, জেগে ওঠে রিয়ালও।
ভিনিসিয়ুসের গোলের পরেই ম্যাচের লাগাম ধরে ফেলে রিয়াল। সিটির ওপর তৈরি করতে থাকে চাপ। প্রথমার্ধে অবশ্য আসেনি আর কোনো সফলতা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুই দলই কিছুটা শারীরিক ফুটবল খেলা শুরু করে।
বিরতির পর ৪৯ মিনিটে ওয়ান টাচ ফুটবলে দারুণ এক আক্রমণে যায় রিয়াল। সিটি ডি-বক্সে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে পড়ে শটও নিয়েছিলেন রিয়াল স্ট্রাইকার বেনজেমা। শেষ পর্যন্ত তার ওই শট জালের দেখা পায়নি রিয়াল। ৫৫ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ডও। কিন্তু এই নরওয়েজিয়ানের শটকে দারুণ ব্লকে মাঠের মাঠের বাইরে পাঠান ডেভিড আলাবা।
সে যাত্রায় হাল্যান্ডকে আলাবা রুখতে পারলেও ৬৭ মিনিটে স্বদেশী ডি ব্রুইনার গোলা শটের কোনো জবাব ছিল না কোর্তোয়ার কাছে। ডি-বক্সের বাইরে ইলকাই গুন্দোয়ানের কাছ থেকে বল পেয়ে বিদ্যুৎ গতিতে শট নেন ডি ব্রুইনা। থামানো দূরে থাক, কোর্তোয়া কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল জড়ায় জালে। এই গোলে সমতা ফেরে ম্যাচে।
ম্যাচের শেষ পর্যায়ে সিটির রক্ষণে বেশ চাপ তৈরি রিয়াল। ঘরের মাঠে জয় তুলে নিতে মরিয়া ছিল তারা। ওদিকে সিটি চেয়েছিল আর কোনো গোল হজম না করতে। এমনকি মনোযোগে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য হয়তো পুরো ম্যাচে কোনো সাবস্টিটিউটই (বদলি) করাননি সিটি কোচ গার্দিওলা।
তবে রিয়াল কোচ আনচেলত্তির বদলি ম্যাচে প্রায় পার্থক্য গড়েই দিয়েছিল। বদলি নেমে শেষদিকে অরিলিয়ে চুয়ামেনি প্রায় গোল করেই বসেছিলেন। তবে তার প্রচেষ্টা ফেরান সিটি গোলরক্ষক। ফলে ড্র নিয়েই বার্নাব্যু ছাড়ে সিটিজেনরা। আগামী বুধবার নিজেদের ডেরা ইতিহাদে দ্বিতীয় লেগে রিয়ালকে আতিথেয়তা দেবে দলটি।
news24bd.tv/SHS