চিনির দাম কমাতে ৩১মে'র পরে আমদানি শুল্ক ছাড় অব্যাহত রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরকে চিঠি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে চিনি বিক্রির পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া, দেশের বাজারে চিনির ঘাটতি এবং পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার বিষয়গুলো দায়ী।
বুধবার (১০ মে) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, বাজারে প্যাকেটজাত চিনি নেই। খোলা চিনি থাকলেও সেগুলো প্রচুর দাম।
সচিব বলেন, চিনির ক্ষেত্রে একটু ঘাটতি আছে, এই ধরনের খবর আছে। আমরা ভোক্তা অধিকারে ইতোমধ্যে বলেছি।
তপন কান্তি আরও বলেন, প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা সর্বোচ্চ মূল্য, এই হিসাবে বিক্রি করার জন্য আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি, আমরা পরশুদিন বিকেলে জানিয়েছি। এখন অবজারভেশনে আছে। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, এটা বাস্তবায়ন করবে কি না। তবে বাজারে রমজানের আগে থেকেই আমদানির ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি ছিল চিনির। সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন হিসাব করে দেখেছে যে আসলে তাদের যে দাবি ততটা হয়তো সমন্বয় করা সম্ভব নয়, কিন্তু আমরা ১০৪ টাকা এবং ১০৯ টাকার জায়গায় ১২০ টাকা এবং ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে সেভাবে বিপণন করতে আমরা অনুরোধ করেছি। আমরা দেখবো যে এটা তারা বাস্তবায়ন করছে কি না। ভোক্তা অধিকারসহ অন্যদেরও বলা হয়েছে। বাস্তবায়নে এখন তারা যাবে মাঠপর্যায়ে।
সিনিয়র সচিব বলেন, ট্যারিফ নির্ধারণের বিষয়টি কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেখে। আমরা যখন দেখি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনটার দাম বেশি বেড়ে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের অনুরোধ করি শুল্ক কমানোর জন্য। আপনারা জানেন যে বিভিন্ন সময় কমানোও হয়। ইতোপূর্বে সয়াবিন তেল এবং পামওয়েলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন কিন্তু চিনির জন্য শুল্ক কমানো হয়েছে। কমানোর পরেও দাম অতটা কমানো যাচ্ছে না। এরমধ্যে মূলত দুটি কারণ যে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি হয়ে গেছে এবং ডলারের দাম বেড়ে গেছে। দেশের মধ্যে পরিবহন খরচ কিছু বেড়ে গেছে। এটা হয়তো দামে প্রতিফলিত হচ্ছে। এ বিষয়টি এনবিআর দেখছে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, চিনির জন্য যে ট্যারিফ হার কমানো হয় সেটি ৩১ মে পর্যন্ত বহাল আছে। আমরা আবার চিঠি লিখতে যাচ্ছি এনবিআরকে যে এটা যেন কমানো হয়। কারণ চিনির দামটা অনেক বেশি বেড়ে গেছে, গত বছরের সঙ্গে যদি তুলনা করি। তবে এনবিআর স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা করে দেখবে যে রাজস্ব ঘাটতি কতটা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকে। রাজস্ব আদায় না হলে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবে।