নরসিংদীতে স্ত্রী-শিশু সন্তানকে গলাকেটে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রতীকী ছবি

নরসিংদীতে স্ত্রী-শিশু সন্তানকে গলাকেটে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

মো. হৃদয় খান, নরসিংদী:

নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে  স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে গলাকেটে জবাই করে হত্যার দায়ে পাষণ্ড স্বামী ফখরুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি’র) আদেশ দিয়েছে আদালত।  

বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন এ আদেশ প্রদান করেন। একই সাথে আসামিকে আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে আদালত।  

দণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে।

সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতো।  

আদালত সূত্রে জানা জায়, ২০১৯ সালে পারিবারিক ভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সঙ্গে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমীর উপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালাতো। ফখরুলের চাকরি না থাকায় প্রায় সময় রেশমির নিকট টাকা পয়সা চাইতো, টাকা না দিলে রেশমিকে মারধোর করতো।

 

এরই মধ্যে তাদের কোল জোড়ে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সবশেষ ২০২১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর গভীর রাতে শহরের ঘোড়াদিয়ার সংঙ্গীতা নিজ বাড়িতে স্ত্রী রেশমি আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমান সাফায়াতকে গলাকেটে জবাই করে হত্যা করেন।  

হত্যার পর অভিযুক্ত ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হত্যার বিষয়টি টের পেয়ে ফখরুলের বড় ভাই শরীফ ধাওয়া দিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।  

খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেন। হত্যার ঘটনায় নিহত রেশমির পিতা পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ের জামাই ফখরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ দেড় বছর মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সন্দেহাতীতভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ফখরুল ইসলামের ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।  

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নরসিংদী জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এড. এম এন অলিউল্লাহ, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এড. মো. আসাদুজ্জামন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. রোজিনা আক্তার।  

মামলার আইনজীবী নরসিংদী জজকোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১৩ কার্য দিবসের মধ্যে মামলা শেষ হয়েছে। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।  

আমরা আসামির সবোর্চ্চ শাস্তি দাবি করেছি। আদালত সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামির মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসির) আদেশ প্রদান করেছে। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা মনেকরি মামলার বাদী স্বল্প সময়ের মধ্যে সঠিক বিচার পেয়েছে।

news24bd.tv/কেআই