‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি দেবে না সরকার’

সংগৃহীত ছবি

‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি দেবে না সরকার’

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সব ভর্তুকি তুলে দিতে চায় সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জ্বালানির দাম নির্ধারণ করা হবে। এ জন্য এগুলোর দাম নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে আয়োজিত এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

 

যৌথভাবে বিশ্বব্যাংক ও বিদ্যুৎ বিভাগ ‘নিউ মেকানিজম টু সাপোর্ট সিস্টেমেটিক আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড অ্যাক্সেস টু ল্যান্ড ফর রিনিউএবল এনার্জি (ইউটিলিটি স্কেল সোলার) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।  

কর্মশালার সমাপনীতে প্রধান অতিথি ছিলেন নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দুই খাতে যে ভর্তুকি দেয়, সেটা সামনে আর দেবে না। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।

এখন সরকারের মূল লক্ষ্য সাশ্রয়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা। তার অংশ হিসেবে আগামী দুই বছরের মধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি, অর্থায়ন সংকট এবং বিশ্বব্যাপী সুদের হার বৃদ্ধি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে বাধা তৈরি করছে। দেশে জ্বালানি রূপান্তর টেকসই করার জন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা। ’ 

‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জোর দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমাদের জমির স্বল্পতা রয়েছে, তাই আমরা পরিকল্পনা করছি স্কুল-কলেজের ছাদ, বড় বড় শিল্পকারখানার ছাদগুলোকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগাতে। ’ 

‘কপ ২৬’-এ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ক্লিন এনার্জির দেশে রূপান্তর হবে বাংলাদেশ। যা পরমাণু, গ্যাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসতে পারে। সে লক্ষ্য অর্জনে মহাপরিকল্পনা পর্যালোচনা করার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।  

তিনি বলেন, ‘আমদের বড় জনগোষ্ঠীর ছোট দেশে ভৌগোলিক নানা চ্যালেঞ্জ আছে। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা, জমির স্বল্পতার চ্যালেঞ্জ আছে। যোগাযোগ অবকাঠামোতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হয়। ’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখন গ্রীষ্মে যে তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে, ৪০-৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা গত ৫০ বছরে দেখা যায়নি। তাই দিনের বেলায় সোলার ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব। আমি মনে করি, ৮ হাজার মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার ইনস্টলেশন সম্ভব। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াটের ব্যবস্থা করতে চাই, যদি আগ্রহী বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়। ’ 

টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা বলেন, ’নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছি। ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৬০০ একর জমি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। ’ 

কর্মশালায় জানায়, দেশের তিনটি এলাকা সোলার পাওয়ারের সম্ভাবনা নিয়ে স্টাডি করেছে বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের সৌরবিদ্যুতে বড় একটা পরিবর্তন আসবে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  

কর্মশালায় বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. নুরুল আলম।

news24bd.tv/আইএএম