বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য উদ্ভাবনী সক্ষমতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ভারতে

বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য উদ্ভাবনী সক্ষমতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ভারতে

বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ভারতের উত্তরখণ্ডের মুসৌরিতে শুরু হলো দুই সপ্তাহের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম (সিপিবি)। সোমবার (২২ মে) ন্যাশনাল সেন্টার ফর গুড গভর্ন্যান্স ক্যাম্পাসে (এনসিজিজি) ৬০ তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়।

এনসিজিজি জানায়, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১৮০০ জন সরকারি কর্মকর্তার দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে ভারত। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত দুই বছরে এনসিজিজি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ৫১৭ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

এবছর বাংলাদেশের ২১৪৫ জন প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশ নিয়েছেন।

প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হল তথ্য, জ্ঞান এবং উদ্ভাবনী ধারণার আদান-প্রদানকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সর্বোত্তম অনুশীলন এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রচার। এটি দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জনপ্রশাসনে অধিকতর দক্ষতা অর্জনে কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে।

উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন এনসিজিজি'র মহাপরিচালক ভরত লাল।

এসময় তিনি বলেন, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রোগ্রামের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল জ্ঞান এবং উদ্ভাবনের বিনিময় সহজ করা।

অনুষ্ঠানে ভরত লাল অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের এই চমৎকার সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করেন। এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা নতুন কিছু শিখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের কী কী ভূমিকা রয়েছে সেগুলো তুলে ধরেন ভরত লাল। তিনি নাগরিকদের আবাসন, পানি, টয়লেট, রান্নার গ্যাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক পরিষেবা এবং দক্ষতা উন্নয়নের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিতে সরকারি কর্মকর্তাদের করণীয় বিষয়গুলোর ওপর জোর দেন।

নারী ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, জাতি গঠনে নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেয়ার আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি নারীদের সুযোগ-সুবিধাকে প্রাধন্য দেয়াসহ লিঙ্গ সমতার বিষয়েও আলোচনা করেন।

দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারি কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে ভরত লাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ সেসময়ে তারা প্রযুক্তির ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে দুর্যোগের ভয়াবহতা তুলে ধরতে পারেন। যার ফলে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমে আসবে।

প্রশিক্ষণের কো-অর্ডিনেটর ড. এ. পি. সিং বলেন, অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং প্রতিষ্ঠান দেখার জন্য এখানে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন। যেগুলো তাদের চমৎকার অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। পরিকল্পিত কিছু সফরের মধ্যে রয়েছে সাহারানপুরের জেলা প্রশাসন, ভারতের পার্লামেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর সংগ্রহ।

এনসিজিজি এপর্যন্ত ১৫টি দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, কেনিয়া, তানজানিয়া, তিউনিসিয়া, সেশেলস, গাম্বিয়া, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, লাওস, ভিয়েতনাম, নেপাল ভুটান, মিয়ানমার ও কম্বোডিয়া। কর্মসূচির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ড. এ. পি. সিং, বাংলাদেশের কোর্স সমন্বয়কারী ড. সঞ্জীব শর্মা এবং এনসিজিজি এর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং টিম।

এই রকম আরও টপিক