গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

সংগৃহীত ছবি

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার। এদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর এটি তৃতীয় নির্বাচন।

গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে সিটির বাইরেও দেশজুড়ে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ, চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা।

তাই স্বাভাবিকভাবেই আজ সবার দৃষ্টি থাকবে গাজীপুরে।

সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, বিজিবির প্রায় ১৩ হাজার সদস্য।

বুধবারের এক ব্রিফিংয়ে গাজীপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন- প্রত্যেকটা কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে ফোর্স ডেপ্লয়মেন্ট করা হয়েছে।

ভোটাররা যেন নির্ভয়ে এসে ভোট দিতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।

দেশের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র, ৫৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন, অর্থাৎ মোট ৩২৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর জন্য ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ভোটের মাঠে রয়েছেন ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৪০৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৬ হাজার ৯৯৪ জন পোলিং অফিসার। এছাড়া নির্বাচনসহায়ক রয়েছেন ১০ হাজার ৯৭১ জন। প্রায় ৩৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৩০ লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ১৮ জন।

বুধবার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনসহ যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠানো হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ করার।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আট জন প্রার্থী। তারা হলেন : আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমতউল্লা খান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান (হাতপাখা), জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমেদ (গোলাপ ফুল), গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম (মাছ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি (হাতি) ও হারুন অর রশিদ (ঘোড়া)।

সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ঋণখেলাপির দায়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। একপর্যায়ে জায়েদা খাতুনই আজমতউল্লা খানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। তাই মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আজমতউল্লা খান ও জায়েদা খাতুনের মধ্যে- এমন অভিমত ভোটার ও নগরবাসীর।

নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি ও র্যাব দায়িত্ব পালন করবে। এর মধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে একটি করে মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রতিটি থানা এলাকায় একটি করে মোট আটটি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। প্রতি দুটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোট ৩০টি র‍্যাবের টিম থাকবে। নগরীর পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।

এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুরে এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-৪ শাখার উপসচিব সোনিয়া হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়। এই দিন সব ব্যাংকও বন্ধ থাকবে।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক