ফরিদপুরে পিতা হত্যার দায়ে বড় মেয়েকে ফাঁসি এবং স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় প্রদান করেন। রায় প্রদানকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা বিবরণে জানা যায়, ঠিকমতো ভরণ পোষণ না দেয়া এবং ২য় বিয়ে করার কারণে ২০১৬ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর রাতে পিতা হাফেজ আবুল বাসারকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে অচেতন করে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
জানা যায়, এ হত্যা কাণ্ড ঘটানোর জন্য উক্ত তারিখের চার মাস আগে থেকে পরিকল্পনা করেন নিহত আবুল বাশারের বড় মেয়ে নিলুফা আক্তার। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিলুফা আক্তার ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় ডায়রিয়া জনিত ও ঘুমের ইনজেকশন কিনে আনেন। এ সময় নিলফার পিতা আবুল বাশার ২য় স্ত্রীকে নিয়ে সালথা উপজেলায় বসবাস করছিলেন। আর ঘটনার দিন নিলুফা আক্তার তার বাবা আবুল বাশারকে বাড়িতে ডেকে এনে খাবারের সাথে ডায়রিয়ার ঔষধ খাইয়ে দেয়।
পরে আবুল বাশার অচেতন হয়ে পরলে আবুল বাশারের মাথায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। আর এ হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিলুফা আক্তার তার মা ও ছোট বোনের সাহায্য নিয়ে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। আর এ হত্যাকাণ্ড অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য ডাকাতেরা এ হত্যাকাণ্ড করেছে বলে প্রতিবেশীদের জানায় নিলুফা ও তার মা।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা করে। ফলে ঘটনার তদন্তের স্বার্থে নিহত আবুল বাশারের ১ম স্ত্রী সাহিদা পারভিন, বড় মেয়ে নিলুফা আক্তার ও ছোট মেয়ে হাফিজা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন। রায়ে হাফেজ আবুল বাশার হত্যার দায়ে বড় মেয়ে নিলুফা আক্তারকে ফাঁসি এবং হত্যার কাজে সহযোগিতা করায় ১ম স্ত্রী সাহিদা পারভিন এবং ছোট মেয়ে হাফিজা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
এদিকে, একই আদালতে অপর একটি মাদক মামলায় ২ জনকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করে রায় ঘোষণা করে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, আবদুল হাই ও মিরাজ শেখ। তাদের বাড়ি ঝিনাইদহ ও গোপালগঞ্জ জেলায়।
news24bd.tv/কেআই
