বাগেরহাটে বিএনপির জনসমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভা

বাগেরহাটে বিএনপির জনসমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে বিএনপির ডাকা সমাবেশস্থলে সভা করলো আওয়ামী লীগ। বিএনপি তাদের সমাবেশের আগে অনুমতি নেয়নি বলে তাদের সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

শনিবার সকালে পূর্ব নির্ধারিত জনসমাবেশ করতে পারেনি জেলা বিএনপি। একই স্থানে পৌর আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে।

বিএনপির সমাবেশে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর থাকার কথা থাকলেও সকাল থেকে রাজনৈতিক মাঠ শাসক দলের দখলে থাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারেননি।

তবে পুলিশ বলছে, আবেদন করায় আওয়ামী লীগকে সমাবেশ করায় অনুমতি দেয়া হয়েছে। এদিন সকালে বাগেরহাটসহ দেশের ১৫ জেলা ও মহানগরে সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই জনসমাবেশ আহবান করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

পুলিশ বিএনপিকে অনুমতি না দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাগেরহাট জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শেখ কামরুল ইসলাম গোরা জানান, বাগেরহাটের বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত জনসমাবেশ ভণ্ডুল করতে পুলিশ গত কয়েকদিন ধরে দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর রহমান আলম, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি সরদার লিয়াকত হোসেন, সদস্য অহিদুল ইসলাম পল্টু, চিতলমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব ঠাণ্ডা, ফকিরহাট বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি এমএ আউয়ালসহ ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগ করে শেখ কামরুল আরও বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা থেকেও পৌর জামায়াতের আমিরসহ বিএনপির ৮জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার মোড়ে জনসমাবেশ করতে আমরা আগে পুলিশের কাছে আবেদন করলেও আমাদের অনুমতি না দিয়ে আওয়ামী লীগকে সমাবেশ করতে দিয়েছে পুলিশ। সব প্রস্তুতি থাকার পরও পুলিশ আমাদের জনসমাবেশ করতে দেয়নি। একারণে বাগেরহাটে এসেও পূর্ব নির্ধারিত জনসমাবেশ বক্তব্য রাখতে পারেনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

বাগেরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, বিএনপির জনসমাবেশ করার আবেদনের বিষয়টি আমার জানা নেই। প্রতিবাদে সমাবেশ করার জন্য আবেদন করায় আওয়ামী লীগকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের পূর্বের দায়েরকৃত নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

অভিযোগ করে বিএনপি নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন বলেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগ যে তাণ্ডব চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে সমাবেশ করতে চেয়েছিলো বাগেরহাট বিএনপি। আমাদের নেতা তারেক জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সব মিলিয়ে এই সরকারের যে অনিয়ম- সেটার বিরুদ্ধে বাগেরহাটে ডাকা সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এই ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও পুলিশ লীগ একজোট হয়ে আমাদের মোড়ে মোড়ে বাধা দিচ্ছে।

এদিন সমাবেশস্থলে বাগেরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বশিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইবনে মিজান হিরুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার ফকরুল আলম সাহেব, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, জেলা তাঁতীলীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল বাকী, জেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসি আশরাফি জেমস, জেলা শ্রমীকলীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি শেখ আবুল হাসেম শিপন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনির হোসেন।

এর আগে জেলা তাঁতীলীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল বাকীর নেতৃত্বে বিশাল মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়। এছাড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে বিশাল মোটরসাইকেল মহড়া শহরের প্রধান প্রধান সড়কে ঘুরতে দেখা গেছে।

সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায় না, এর মাধ্যমে তারা দেশের মানুষের স্বপ্নকে হত্যা করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালীন জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল দেশ। আবারও তারা দেশকে পাকিস্তানী ধ্যান ধারণার রাষ্ট্র বানাতে চায়। এই অপচেষ্টাকারী আগুন সন্ত্রাসীদের জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক