হালালভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য রিজিক উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম। আমাদের নবীজি (সা.)-ও ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। যাঁরা সত্ভাবে ব্যবসা করেন, ইসলামের দৃষ্টিতে তাঁদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সত্যবাদী ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।
ব্যবসা যখন আমানতদারি, বিশ্বস্ততা ও সততার সঙ্গে করা হবে, তখন এটি নেক আমলে পরিণত হবে। কিন্তু কেউ যদি ব্যবসা-বাণিজ্যে অসততার আশ্রয় নেয়, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে সবচেয়ে বড় পাপিষ্ঠরূপে উঠতে হবে। তাই ব্যবসায় সততা ও তাকওয়া অবলম্বন করা আবশ্যক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে উঠানো হবে; কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা ধারণ করে তারা এর ব্যতিক্রম।
নবীজি (সা.)-এর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবসা-বাণিজ্য করলে তা আল্লাহর রহমত লাভের মাধ্যম হতে পারে। যারা গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদত করার পাশাপাশি হালালভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, গ্রাহকের প্রতি উদারচিত্ত হবে, মহান আল্লাহ তাদের উত্কৃষ্ট প্রতিদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেই সব গৃহ, যাকে মর্যাদায় সমুন্নত করতে এবং যাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। সেই সব লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান হতে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, আল্লাহ তাআলা তাদের কর্মের উত্কৃষ্টতম প্রতিদান দেবেন। অর্থাৎ শুধু কর্মের প্রতিদানই শেষ নয়; বরং আল্লাহ নিজ কৃপায় তাদের বাড়তি নেয়ামতও দান করবেন। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩৬-৩৮)
তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে চাইলে কোরআন-হাদিসের নিদের্শনা মেনে ব্যবসা করতে হবে। ব্যবসায় বরকত লাভের আরেকটি করণীয় হলো, উদারচিত্ত হওয়া। ব্যবসা-বাণিজ্যে উদারচিত্ত হলে বেশি সফলতা পাওয়া যায়। এতে গ্রাহকরাও পরবর্তী সময়ে লেনদেন করতে আগ্রহী হয়।
মহান আল্লাহর রহমতও পাওয়া যায়। রাসুুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিক্রয়কালে উদারচিত্ত, ক্রয়কালেও উদারচিত্ত এবং পাওনা আদায়ের তাগাদায়ও উদারচিত্ত, আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি দয়া করুন। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২০৩)