দ্রুত ব্লাড ক্যান্সার সনাক্ত করলে চিকিৎসায় সাফল্য মেলে

সংগৃহীত ছবি

বিএসএমএমইউতে বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার দিবস পালিত

দ্রুত ব্লাড ক্যান্সার সনাক্ত করলে চিকিৎসায় সাফল্য মেলে

অনলাইন ডেস্ক

২০৩৫ সালের দিকে বাংলাদেশে দুই লাখ ৫০ হাজারের মতো ব্লাড ক্যান্সারের নতুন রোগী শনাক্ত হতে পারে। যতগুলো ক্যান্সার রয়েছে তার মধ্যে ৬.৫ শতাংশ হচ্ছে ব্লাড ক্যান্সার। বাংলাদেশে এই সংখ্যা ৪৮ শতাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্লাড ক্যান্সারের সঠিক কারণ প্রায়ই অজানা, তাই এটি প্রতিরোধ করা সব সময় সম্ভব হয় না।

তবে নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত রোগটি সনাক্ত করলে চিকিৎসায় সাফল্য মেলে।  

সাধারণত রক্তের সিবিসি এবং পেরিফেরাল ব্লাড ফিল্ম (পিবিএফ) পরীক্ষা করলে রক্তে কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা জানা যায়।  স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা, কিছু রাসায়নিক এবং বিকিরণের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, বংশগত রোগের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, মদ্যপান ও ধূমপান না করা, কিছু সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা, নিয়মিত চেকআপ করলে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

আজ (২৮ মে) বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ ও হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

 জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান, র‌্যালি, সেমিনার, স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহ্‌উদ্দীন শাহ্ এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।  

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুজ্জামান খান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেমাটোলজি বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. নাজিয়া শারমিন ও ডা. নাহিদ আফরোজা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেসিডেন্ট ডা. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও ডা. মিম জারিন তাসনিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, ডা. শেখ সাইফুল ইসলাম শাহীন প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও মেডিসিন অনুষদের কোর্স ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. সালাহ্উদ্দীন শাহ্ বলেন, ব্লাড ক্যান্সারের ধরন এবং স্টেজ বা পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো : ঘন ঘন জ্বর হওয়া ও কিছুতেই জ্বর না কমা, হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দিন দিন কমে যাওয়ার ফলে দুর্বল লাগা, ঘন ঘন সংক্রমণ, ঘন ঘন কাশি, ক্ষত বা অল্পতেই রক্তক্ষরণ, দেহের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে হাড়ে ব্যথা অনুভূত হওয়া, গলা ও পেটের বিভিন্ন অঙ্গ; যেমন—লিভার, প্লিহা, লিম্ফনোড ইত্যাদির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এ ছাড়া ঘাড়, পিঠও ফুলতে পারে,  রাতের বেলায় শরীর ঘেমে যাওয়া, ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, খাবারে অরুচি অথবা সঠিকভাবে খাওয়াদাওয়ার পরও ছয় মাসের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া, ওষুধ খেয়েও রোগ ভালো না হওয়া ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। তবে আমরা যদি স্বেচ্ছায় রক্তদান করি, বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।  বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্ত রাখতে সহায়তা করা আমাদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। দেশের মানুষ ভালো থাকবে।

বিএসএমএমইউতে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সুবিধা চালু রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগীদের বিশ্বমানের চিকিৎসা এদেশেই নিশ্চিত হবে। তবে রক্তের ক্যান্সার প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সুস্থ মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসতে হবে।

news24bd.tv/আইএএম