মাদারীপুরে নিহতের এক মাস পর কবর কবর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মনি ওরফে লিয়া নামে এক গৃহবধূর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূ কেয়া মনি ওরফে লিয়া নামের গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ আনে নিহতের পরিবার।
সে অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার সকালে লিয়ার লাশ কবর থেকে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হয়। ঘটনার পরে নিহতের বাবা থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলে রিপোর্ট পাওয়ার আগে মামলা নিতে অসম্মতি জানায় থানা পুলিশ।
মামলার পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন নিহতের বাবা। সে আবেদনের ভিত্তিতে কোর্টের আদেশে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফুয়াদ হাসান লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় সঠিক তদন্ত রিপোর্ট করা হয়নি।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর পৌর এলাকার ছোবাহান কবিরাজের মেয়ে মনি ওরফে লিয়ার উপজেলার দুধ খালি ইউনিয়নের এওজ গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে মাসুদ সরদারের সাথে প্রায় দু’বছর আগে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। এনিয়ে কয়েক দফা পারিবারিকভাবে মিটমাটও হয়।
অভিযোগে বলা হয়, গত ৩০ মার্চ বিকেলে পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয় নিহতের স্বামী মাসুদ ও তার পরিবার। তবে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে মাসুদ ও তার পরিবার শুরু করে মারধর শারীরিক নির্যাতন। মারধরের একপর্যায়ে গৃহবধূ লিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। গৃহবধূর মৃত্যু নিশ্চিত হলে মাসুদ ও পরিবার এবং বাড়ির লোকজন মিলে পরিকল্পনা করে লিয়ার গলায় ওড়না জড়িয়ে ফাঁস দিয়ে ঘরের সাথে ঝুলিয়ে জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি আশেপাশের লোকজন বুঝতে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে নিহত ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসনে চৌধুরী জানান, গৃহবধূর লিয়ার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত রিপোর্ট নিহতের পরিবারের মনমতো না হওয়ায় লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ফের তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।