অনিশ্চয়তায় বিসিএস পরীক্ষার্থীরা

সংগৃহীত ছবি

অনিশ্চয়তায় বিসিএস পরীক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক

পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলপ্রকাশে দীর্ঘ সূত্রিতায় বিপাকে পড়েছেন বিসিএস পরীক্ষার্থীরা।  সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪১তম বিসিএসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর। প্রায় সাড়ে তিন বছর পরও এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়নি। প্রায় প্রতিটি বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষ করতেই কমবেশি এমন সময় লাগছে।

এই বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না পিএসসি। তিন বছরের চক্করে নিয়োগপ্রত্যাশীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে ভুগছেন অনিশ্চয়তায়। ফলাফলের অপেক্ষায় থেকে কারও পেরিয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স।

১৯ মে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছে।

চিকিৎসকদের জন্য ৪২তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল গত বছর প্রকাশের পর নিয়োগপ্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। তবে বিধি জটিলতায় ৪০তম নন-ক্যাডার নিয়োগ, ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের অপেক্ষায়।

পিএসসি বলছে, করোনা মহামারি, মৌখিক পরীক্ষার কমসংখ্যক বোর্ড ও লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে একাধিক পরীক্ষকের বিধানসহ নানা কারণে একাধিক বিসিএস আটকে গেছে। এগুলো শেষ করতে রোডম্যাপ করা হয়েছে। এর সুফল শিগগিরই পাওয়া যাবে। চলমান বিসিএসগুলো শেষ করার পরই নির্দিষ্ট সময়ে একটি বিসিএস শেষ করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, সরকারি চাকরিতে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি পদ খালি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির পদ ৪৩ হাজার ৩৩৬টি এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ৪০ হাজার ৫৬১টি। বাকিগুলো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি।

পিএসসি সূত্র বলছে, ৪০তম নন-ক্যাডার নিয়োগবিধিসংক্রান্ত জটিলতায় আটকে গেছে। সংশোধিত বিধিটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই নন-ক্যাডার ফল প্রকাশ করা হবে। ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা গত ৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে এখনো চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশের রোডম্যাপ করা হয়েছে। এরপর ছয় মাসের মধ্যে ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। পরের ছয় মাসের ব্যবধানে ৪৪ ও ৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে চায় পিএসসি।

সূত্র আরও জানায়, ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল আগামী সপ্তাহে প্রকাশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ২৯ মে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, বিভিন্ন কারণে পিএসসির যে পরীক্ষাগুলোর ফল বিলম্বিত হয়েছে, সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব প্রকাশের জন্য কমিশন দিনরাত কাজ করছে। শিগগিরই এর ফল দেখা যাবে। তিনি বলেন, এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষের যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল এর আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ। ভবিষ্যতে এর সুফল পাওয়া যাবে।

এদিকে চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, একটি বিসিএস শেষ হতে দীর্ঘ সময় লাগায় ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তাঁরা। একটি বিসিএস এক বছরের মধ্যে শেষ করার দাবি তাঁদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা মৃদুল হাসান বলেন, ‘২০১৯ সালে ৪১তম বিসিএসের জন্য আবেদন করেছি। অথচ এর মৌখিক পরীক্ষা দিলাম কিছুদিন আগে। এই বিসিএসে চাকরির আশায় অন্য সরকারি চাকরিতে যোগ দিইনি। চাকরির বয়সও শেষের দিকে। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। ’

ঢাকা কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতক করা সোহেল আহমেদ বলেন, একটি বিসিএস শেষ করতে কয়েক বছর লাগায় একাধিক বিসিএসে অংশগ্রহণের সুযোগ কমছে। এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা জরুরি।

সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে বিসিএস শেষ করা উচিত। না হলে রাষ্ট্র ও চাকরিপ্রার্থী উভয়েরই ক্ষতি হয়। সময়মতো কর্মকর্তা না পেলে রাষ্ট্রের কাজে ব্যাঘাত ঘটে।

news24bd.tv/আইএএম