‌‘শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক দার্শনিক’

সংগৃহীত ছবি

বিএসএমএমইউতে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা নিয়ে গবেষণার ফল প্রকাশ

‌‘শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক দার্শনিক’

অনলাইন ডেস্ক

মানবিক গুণাবলীর অধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক দার্শনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থাও একটি দর্শন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবায় সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ, গুণগত মানও ভালো। আমাদের দায়িত্ব হলো প্রধানমন্ত্রীর দর্শনকে এগিয়ে নেয়া ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া।

 

আজ বুধবার (৩১ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবাসমূহের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশদ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে সম্প্রতি জাতিসংঘে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নামে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা প্রস্তাব আকারে গৃহীত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী।  

বিশেষ অতিথি ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর শাহানা পারভীন।

গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক।  

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, অধ্যাপক ডা. শিরিন তরফদার, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান প্রমুখ ।  

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, মানবিক গুণাবলীর অধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক দার্শনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থাও একটি দর্শন। আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো প্রধানমন্ত্রীর দর্শনকে এগিয়ে নেয়া ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া।  
 
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নামে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা প্রস্তাব আকারে গৃহীত হয়েছে। বিশ্বের ৭০টি দেশ এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা ও কার্যকারিতা বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হওয়ার পথ সুগম হলো।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ ভালো থাকে এবং থাকবে। তবে বিএনপি জামায়াতের বিষয়ে সতর্ক থাকবে হবে। তারা ক্ষমতায় গিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল যা খুবই দুঃখজনক। উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে মোট বাজেটের ১০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান।  
 
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, যা প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন। জাতির পিতার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।  
 
পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক জানান, অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিক (সিসি) কেন্দ্রগুলোর অবস্থা সন্তোষজনক ছিল। কন্ট্রোল এলাকার সেবাগ্রহণকারীদের কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা পাওয়ার সুবিধা ভাল ছিল, কিন্তু তাদের এই সেবাগুলোর বিষয়ে সন্তুষ্টি কম ছিল। কেস এলাকার সেবাগুলোর গুণমান ভাল ছিল। কন্ট্রোল এলাকার সেবাগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগুলোর প্রাপ্যতায় কিছুটা বাধা ছিল। এছাড়াও, কন্ট্রোল এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা, উঠান বৈঠক, স্বাস্থ্য শিক্ষা সেশন, বাড়ি কেন্দ্রিক সেবা, রেফার হওয়া রোগীর সংখ্যা, কমিউনিটি গ্রুপ সভা, কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ সভা এবং বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার সংখ্যা কম ছিল, যেখানে কেস এলাকায় ইপিআই সেশন এবং রেফার হওয়া রোগীর সংখ্যা কম ছিল। প্রায় ৭০ শতাংশ কমিউনিটির জনগণ এমএইচভি সেবাগুলোর সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। প্রায় ৭০ শতাংশ এমএইচভি অনলাইন এবং অ্যাপ-ভিত্তিক ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন। সিএইচসিপিগণ মূল্যায়ন করেছেন যে, এমএইচভিগণ তাদের দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করেন।

কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা এবং গ্রামীণ মানুষদের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা অপরিহার্য। সিসি এবং এমএইচন্ডি সেবাগুলোর ব্যবহার সহজ করার জন্য সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

সব নাগরিকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার সারাদেশে প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিলো মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার (এমএইচভি) পরিসেবার মূল্যায়ন করা এবং যেই এলাকায় এমএইচভি নাই সেই এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলির কার্যকারিতার সাথে একটি বাংলাদেশের চারটি উপজেলায় বিশটি কমিউনিটি ক্লিনিকে এবং তাদের ক্যাচমেন্ট এলাকায় পরিচালিত হয়। কমিউনিটি ক্লিনিক ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রাপ্তবয়স্ক জনগণ (১২০০), কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (১৫), মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার (এমএইচভি) (৭৫), লোকাল স্টেকহোল্ডার এবং নীতিনির্ধারকদের (১৭) কাছ থেকে প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার পরিসেবাসহ কমিউনিটি ক্লিনিক এর এলাকা গুলোকে কেস এলাকা এবং মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার পরিসেবা ছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক এলাকাগুলোকে কন্ট্রোল এলাকা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।