গুলি ছুঁড়ে পালানোর সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার রূপগঞ্জের মোশা বাহিনী প্রধান

সংগৃহীত ছবি

গুলি ছুঁড়ে পালানোর সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার রূপগঞ্জের মোশা বাহিনী প্রধান

জুবায়ের সানি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মোশা বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে মোশা দেশ থেকে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। অবৈধভাবে ভারতে পালানোর জন্য সহযোগী দেলোয়ারকে নিয়ে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে আত্মগোপন করেন। তবে দেশ ত্যাগ করার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

র‍্যাব বলছে, হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, চাঁদাবাজি, মাদক, প্রতারণাসহ অন্তত ৪০ মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, গত ২৫ মে রূপগঞ্জে স্থানীয় মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলাসহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হলে মোশা বাহিনীর সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এক পর্যায়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চড়াও হয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৫-৬ জন পুলিশ সদস্যকে আহত করে।

এসময় তারা মোশারফকে ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়। এ ঘটনায় র‍্যাব জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ঘটনার পর মোশারফ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায়।

এরপর র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে বুধবার রাতে ভুরুঙ্গামারী থেকে মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে রূপগঞ্জ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জমি দখল, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো। মোশার দলের সদস্য সংখ্যা ৭০-৮০ জন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মোশারফের নেতৃত্বে দলের সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দেশি ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতো।

তিনি জানান, মোশারফ স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সে ‘মোশা বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪০টির বেশি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন।

news24bd/ARH