সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের চরাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় নদীর ঘাটে পড়ে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্স দুটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ময়লা আবর্জনা জমে অ্যাম্বুলেন্সটি দুটি নষ্ট হয়ে পড়েছে। অ্যাম্বুলেন্সটি দুটি চরাঞ্চলের মানুষের কোনো উপকারেই লাগছে না। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবহারের সুযোগ কম বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানা গেছে, দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রথমটি কত বছর আগে প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন তার সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে সাত বছর আগে দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী আরেকটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স চরাঞ্চলের মানুষের জন্য দিয়েছিলেন। এটি চালানোর জন্য আউটসোর্সিং থেকে একজন চালকও রয়েছেন।
কিন্তু কখনও এটি রোগী আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়নি বলে চরাঞ্চলবাসী অভিযোগ করেছেন।
কাজীপুর সদর ইউনিয়নের খুদবান্ধি গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, প্রধানমন্ত্রী চরাঞ্চলের মানুষের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছেন। সেটি আমাদের জানা নেই। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স দুটি স্বাস্থ্যসেবার কাজে কখনও ব্যবহার করতেও দেখিনি।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা আবু স্বপন ও সাইদুর রহমান জানান, দুর্গম চরাঞ্চলের বসবাসরত মানুষের জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত আবশ্যকীয়। সরকারের পক্ষ থেকে এমন সুবিধা দেয়া হলে মানুষের খুবই উপকার হতো। সাধারণত দেখা যায় কোনো রোগীকে চরাঞ্চল থেকে হাসপাতালে নেয়া খুবই কষ্টকর। সরকারের পক্ষ থেকে একটি ভালমানের নৌ অ্যাম্বুলেন্স থাকলে সঠিক সময়ে উন্নত স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি অর্থ সাশ্রয় হতো।
দুর্গম চরাঞ্চল তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়েছে কয়েক বছর আগে শুনেছিলাম। কিন্তু কোন কার্যক্রম আজ পর্যন্ত চোখে পড়েনি। নৌ অ্যাম্বুলেন্স থাকলে চরাঞ্চলের মানুষের খুব উপকার হতো। বিষয়টি নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হবে।
কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোমেনা পারভিন পারুল জানান, দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি একদম অকেজো হয়ে পড়েছে। আরেকটি গত বছরের শেষের দিকে সংস্কার করা হলেও ধীরগতি সম্পন্ন হওয়ায় জনপ্রিয়তা পায়নি। এছাড়া প্রয়োজনীয় তেল বা সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এটা চালানো হচ্ছে না।
সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় জানান, অ্যাম্বুলেন্স আছে কিনা সে বিষয় আমার জানা নেই।
