দুই কারণে আমার দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী 

সংগৃহীত ছবি

দুই কারণে আমার দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী 

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জ্বালানি ও নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। একদিকে মূল্যস্ফীতি আর অপরদিকে এখন বিদ্যুৎ নেই; এই দুটো কষ্ট আমার দেশের মানুষ পাচ্ছে। আর একবার যদি বিদ্যুতের পাঙ্খায় বাতাস খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তারপরে না পেলে তো আরও কষ্ট হয়ে যায়।

এটাও তো বাস্তব কথা। ’

রোববার (৪ জুন) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় যাত্রীবাহী নতুন ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।  

এ সময় মোবাইল ফোন কানে দিয়ে রেললাইনে হাঁটা এবং রেলগেট পড়ার পরও গাড়ি চলাচলের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। এর ফলে অল্প খরচে মানুষ যাতায়াত করতে পারে। আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারে। ’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেল দুর্ঘটনা ঘটে, ভারতে কী ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, আপনারা দেখেছেন। এ রকম দুর্ঘটনা সচরাচর চোখে দেখা যায় না। একসঙ্গে তিনটি রেল দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ২৮৮ জন মারা গেছেন। আমি তাদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে শোক জানিয়েছি। এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দুজন বাংলাদেশিও আহত রয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা সত্যি চিন্তার বিষয়। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে আমাদের রেলপথ, সড়ক পথ, নৌপথ সবকিছু যাতে চালু হয় তার ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের বিমানবন্দরগুলো উন্নত করেছি। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বব্যাপী গ্যাস, তেল, কয়লা সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না- এরকমই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। যার জন্য আমি জানি এই গরমে মানুষের তো কষ্ট হচ্ছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমের মৌসুম, ম্যাংগো এক্সপ্রেস চালু করা হয়েছে। সে জন্য রেলকে ধন্যবাদ জানাই। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ উত্তরাঞ্চলের আম খেতে পারবে। আমাদের বন্ধুত্বপ্রতীম দেশগুলোতে আম পাঠাবো, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো তো আম পাঠাব। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এর পরে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এ দেশের উন্নয়ন চায়নি। তারা দেশটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। জনগণের ভোটের অধিকার, খাবার অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রতি রাতে কারফিউ, মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা সুযোগ ছিল না। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার এক প্রক্রিয়া চলছিল এ দেশে। ’ 

২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছিলাম, যে স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। উত্তরবঙ্গে সবসময় মন্দা লেগেই থাকতো, আওয়ামী লীগ যেত, তাদের জন্য লঙ্গরখানা খুলতাম। তাদের দুর্দশা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। ’

এ সময় চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এবং রেলওয়ে কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

news24bd.tv/আইএএম