রাজধানীতে সক্রিয় ছয় হাজার ছিনতাইকারী : ডিএমপি

প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে সক্রিয় ছয় হাজার ছিনতাইকারী : ডিএমপি

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার চার এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া ঢাকায় ছয় হাজারের বেশি ছিনতাইকারী রয়েছে বলেও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই সংস্থাটি।

পুলিশের তথ্যমতে, ঢাকার পল্লবী, মিরপুর. ভাটারা ও বাড্ডা এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। তবে অন্যান্য এলাকায়ও ছিনতাই হচ্ছে।

এর মধ্যে ছিনতাইকারী বেশি ভাটারা, শাহবাগ, শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, তেজগাঁও, রমনা, হাতিরঝিল ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায়।

এই ছয় হাজার ছিনতাইকারীর মধ্যে ছিনতাইয়ে সরাসরি জড়িত ১ হাজার ৭৩৭ জন এবং ৪ হাজার ৪৬১ জন ডাকাতিতে জড়িত। ডিএমপির তৈরি করা কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে এসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বৃত্তান্ত রয়েছে। এতে ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য রয়েছে।

ডিএমপির তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী ও ডাকাত রয়েছে তেজগাঁও বিভাগে। সবচেয়ে কম মিরপুর বিভাগে। থানা হিসেবে ছিনতাইকারী ও ডাকাতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ভাটারা, শাহবাগ ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় (প্রতিটি থানায় ৩৪ জন করে)। এরপর রয়েছে হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, তেজগাঁও, রমনা, হাতিরঝিল ও উত্তরা পশ্চিম থানা।

তথ্যভাণ্ডার অনুযায়ী, সবচেয়ে কম ছিনতাইকারী ও ডাকাতের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে উত্তরখান, দক্ষিণখান ও উত্তরা পূর্ব থানায়। এই তিন থানা এলাকার ৬ জন করে মোট ১৮ জন তালিকাভুক্ত হয়েছে।

এই হিসেব সাধারণত অপরাধী গ্রেপ্তারের ওপর নির্ভর করে তৈরি বলে জানিয়েছে পুলিশ। যেসব এলাকায় ছিনতাইকারী ও ডাকাত বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে, সেসব থানা এলাকার অপরাধীর বৃত্তান্ত তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছে বেশি।

শাহবাগ, মগবাজার, রমনা, মালিবাগ রেলগেট, চানখাঁরপুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, গুলিস্তান, ধানমন্ডি, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড, নিউমার্কেট, পান্থপথ মোড় ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে।

পুলিশ জানায়, ছিনতাইকারীরা সাধারণত মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত তৎপর থাকে। তারা ভোরে বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশন থেকে বাসামুখী রিকশাযাত্রী অথবা বাসা থেকে স্টেশনমুখী যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু বানায়।

একইসাথে এরা কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন আড়তমুখী ব্যবসায়ীদেরও লক্ষ্যবস্তু করে। এ ছাড়া নির্জন গলিতে ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে পথচারীদের টাকাপয়সা কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। আবার গাড়ি ও মোটরসাইকেলে করে পথ আগলে মানুষের টাকা, মুঠোফোন বা স্বর্ণালংকার কেড়ে নেয় কোনো কোনো চক্র।

এলাকাভেদে ছিনতাইয়ের ধরনও একেক রকমের। বিমানবন্দর সড়কে পুলিশ, গোয়েন্দা শাখাসহ (ডিবি) বিভিন্ন সংস্থার পরিচয়ে বেশির ভাগ ছিনতাই হয়। এসব ছিনতাইকারী রাস্তায় ভুয়া তল্লাশিচৌকি (চেকপোস্ট) বসিয়ে বিদেশফেরত যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এমন অনেক অপরাধী বিভিন্ন সময় ধরাও পড়েছে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এসআইভিএস গড়ে তোলা হয়েছে। এর মাধ্যমে অপরাধী শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। যেসব অপরাধী ধরা পড়ছে, তাদের বৃত্তান্ত এসআইভিএসে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে।

ডিএমপি এই তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলেছে সাসপেক্ট আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম (এসআইভিএস) নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। তাতে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে জড়িত ৬ হাজার ১৯৮ জনের ছবিসহ নাম, বয়স, বাবার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, আঙুলের ছাপ, গ্রেপ্তারের তারিখ, তাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা, গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তার নাম-পদবি ও মুঠোফোন নম্বর রয়েছে।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক