ঘরে লোডশেডিং আর বাজারে মূল্যস্ফীতির চাপে নাকাল জনগণ

সংগৃহীত ছবি

ঘরে লোডশেডিং আর বাজারে মূল্যস্ফীতির চাপে নাকাল জনগণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখলো বাংলাদেশ। গত মে মাসে যেটা রেকর্ড করেছে। বাজারের এই গরমের আবহে শান্তি নেই ঘরেও। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত।

শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে।

চলতি বছরের মে মাসে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দুই অঙ্কের একেবারেই কাছাকাছি অর্থাৎ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে টানা তিন মাস মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।

মানুষের আয় বাড়ছে কম, খরচ বাড়ছে বেশি। ফলে বিশেষ করে স্বল্প ও মধ্য-আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। তারা জীবিকানির্বাহ করতে খরচের খাতা ছোট করছেন। অনেকে ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সর্বত্রই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্য, গ্রাম ও শহর সব জায়গায় মূল্যস্ফীতির ছাপ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি গেড়ে বসেছে। এক্ষেত্রে ডলার সংকটের কারণে আমদানি কমানোর খেসারত দিতে হচ্ছে। আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে শুধু যে ভোগ্যপণ্য আমদানি কমেছে তা নয়, এর সঙ্গে শিল্পের কাঁচামাল এবং প্রক্রিয়াগত পণ্যও (যেমন: স্পেয়ার্স পার্টস) আমদানি কমেছে। ফলে উৎপাদন কমে গিয়ে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকট বেশি জ্বালাচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ-এসব না থাকলে তো উৎপাদন হবে না।

বাজারে অস্বস্তি, অন্যদিকে শান্তি নেই ঘরেও। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সোমবার বিকেলে তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, তীব্র গরম এবং সেই সাথে লোডশেডিংয়ের কারণে সবার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে, যা সবারই জানা প্রয়োজন।

পোস্টে তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির ধাক্কা, পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েলসহ সকল প্রকার জ্বালানির মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। সেই সাথে প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যে সংকট এখনো চলমান। অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি যথা গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস অয়েল আমদানিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে।

ফলশ্রুতিতে বর্তমানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং। তবে আমরা খুব দ্রুতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক