বাবার নামের সাথে মিল থাকায় 

মেধাবী শিক্ষার্থীকে অন্যের মামলায় গ্রেপ্তারের অভিযোগ!

হাবিবুল ইসলাম হাবিব :

নিরপরাধ ব্যক্তিকে অন্যের মামলায় ফাঁসানোর ঘটনা দেশে নতুন নয়, তবে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে অন্যের মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে ঢুকিয়েছে পুলিশ।  

দর্শক বলছিলাম রংপুরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি আলমগিরের পরিবর্তে আল আমীন নামের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ বিষয়ে এক রিটের শুনানি নিয়ে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে পিবিআই প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

 

২০১৫ সালের ১৪ মে রাত ৯ টায় রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার হাজীপাড়া ১৫ বছরের কিশোরী শাহিনাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ঐ ঘটনায় আবুজার, নাজির হোসেন, আব্দুল করিম, আমিনুর রহমান ও আলমগির এই ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।  

রায়ের সময়, আলমগির ব্যাতিত বাকি চর আসামি রায়ের সময় কারাগারে ছিলেন। গত ১৮ মার্চ মো. হান্নানের ছেলে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে আলমগির নাম দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।

কিন্তু পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় আলমগির আল আমীন নামে আত্মগোপনে ছিল।  

সম্প্রতি হাইকোর্টে এক রিটে আল আমীনের বড় ভাই  উল্লেখ করেন তার নিরপরাধ ভাই আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রিটে বলা হয় ঘটনার সময় আল আমিনের বয়স ছিল ১৫ বছর। কিন্তু অভিযোগপত্রে আলমগিরের বয়স উল্লেখ করা হয় ২০ বছর।

জামিন চেয়ে আবেদন করে তার ভাই আলী হোসেন। আদালত শুনানি নিয়ে পিবিআইকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে প্রকৃত আসামি আলমগিরের পরিবর্তে নিরপরাধ কিশোর আলামিনকে গ্রেপ্তার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আল আমিন যদি নির্দোষ হয় তাহলে সে খালাস পাবে। পিবিআই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

আলামিনের আইনজীবী বলছেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলেই বেরিয়ে আসবে নিরপরাধ আল আমিনকে অন্যের মামলায় কে বা কারা ফাঁসিয়েছে। তার মত নিরপরাধ মানুষ যেন আর হয়রানীর শিকার না হয় সেই প্রত্যাশা তার।

২০১৫ সালের ১৪ মে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা ও মা লালমনিরহাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ওই কিশোরী ও তার ভাগনে বাড়িতে একা ছিল। এ সুযোগে আবুজাফর সহযোগীদের নিয়ে সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর বাড়িতে যান এবং তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পাশের একটি খেতে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যান তাঁরা।  

ওই দিন রাতে কিশোরীর বাবা-মা বাড়িতে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। পরের দিন সকালে বাড়ির অদূরে একটি খেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।