লোডশেডিংয়ে শিল্পোৎপাদন কমেছে ৩০-৫০ শতাংশ

সংগৃহীত ছবি

লোডশেডিংয়ে শিল্পোৎপাদন কমেছে ৩০-৫০ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক

সারাদেশে জ্বালানির অভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদন কমেছে অন্তত ৩০ শতাংশ। আর মাঝারি শিল্পের উৎপাদন কমেছে অন্তত ৫০ শতাংশ। লোডশেডিংয়ের ক্ষতি পোষাতে বাড়তি কাজ করছেন শ্রমিকরা।

এতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে মালিককে। কারণ শ্রমিকদের বাড়তি খরচ দেওয়া লাগলেও মালিকের উৎপাদন হচ্ছে কম। উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিনে কমপক্ষে তিন-চারবার বিদ্যুৎ যায়। একবার গেলে ঘণ্টার বেশি দেখা মেলে না বিদ্যুতের।

এই সময় অলস বসে থাকতে হয় শ্রমিকদের। ফলে পণ্য ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিতে লাগছে বাড়তি সময়। এতে ক্রেতা বিরক্ত হচ্ছে, কমছে আয়।

রাজধানীর পান্থপথ এলাকার কাঁঠালবাগানে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্টিলের তৈরি পণ্য প্রস্তুত করছে।

এগুলো সব চুক্তিভিত্তিক। স্টিলের দরজা, জানালা, খাট, সোফা, বারান্দার গ্রিল, চেয়ার, টেবিল, গ্রিল, রেলিংসহ বিল্ডিংয়ের প্রয়োজনীয় সব কিছুই তারা তৈরি করে। এর জন্য থাকে একটি নির্দিষ্ট সময়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারছেন না দোকানিরা।  

কাঁঠালবাগানের মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের হেড মিস্ত্রি মো. বাবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দিনের মধ্যে তিন-চারবার বিদ্যুৎ চলে যায়। রাতেও যায়। ধরুন ইমার্জেন্সি ডেলিভারি দেওয়ার জন্য কাজ করছি। তখন যদি কারেন্ট চলে যায় তখন বসে থাকতে হয়। যে মালটা এক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটা দুই ঘণ্টার বেশি লাগছে। মালিকের কিন্তু শ্রমিকের বেতন ঠিকই দিতে হচ্ছে, অথচ কাজ হচ্ছে অনেক কম। গ্রাহকও চিল্লাচিল্লি করে। ’

বন্যা ব্যান্ড স্টিলের ম্যানেজার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘সময়মতো মাল ডেলিভারি দিতে পারছি না। এতে কাস্টমারের সঙ্গে ঝগড়া হয়, বিল কম দিতে চায়। আমরা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু কারেন্ট না থাকলে দেখা যায় ৮টার পরও কাজ করতে হয়। এতে পরিশ্রম বেশি হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকার সময় আমাদের শ্রমিকরা বসে থাকে। ’

কাজী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ম্যানেজার মো. সবুজ বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন তিন ভাগের এক ভাগ বা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। দিনে যে কাজ শেষ না হয় সেটা বাড়তি সময়ে করতে হয়। দেখা যায় রাত ১০টা, ১১ টা বা ১২টা পর্যন্ত কাজ করে মাল ডেলিভারি দিই। ’

ওদিকে প্রিন্টিং অ্যান্ড প্রেসের চিত্র একই রকম। নীলক্ষেতের মুরাদ গ্রাফিকস অ্যান্ড প্রেসে তৈরি করা হয় ম্যাগাজিন, ব্রুশিয়ার, ক্যালেন্ডার, পোস্টার, লিফলেটসহ গ্রাফিকসের নানা কাজ। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মুরাদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা কোনো কাজ করতে পারি না। এটা লাগবেই। তা ছাড়া কম্পিউটার বা প্রেসের কোনো কাজই করতে পারি না। এতে ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। ’

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক