মার্কিন অর্থনীতি ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ

সংগৃহীত ছবি

মার্কিন অর্থনীতি ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যখন জ্বালানি তেলের দাম তুঙ্গে তখন তেল উৎপাদন কমানো সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব। বিষয়টি মোটেই ভালোভাবে নেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করতে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাইডেন। তবে তাতে মোটেই দমে যাননি সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান।

এমনটা করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ধসিয়ে দেওয়ার পাল্টা হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।  

সম্প্রতি ফাঁস হয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের বেশ কিছু গোপন নথিতে এ তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদামাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে গত বছর জুনের থেকে মন্দা শুরু হয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দাভাব।

এই পরিস্থিতিতে তেল বিক্রি থেকে মুনাফা নিশ্চিত রাখতে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে খনি থেকে পেট্রোলিয়ামের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিল জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌদি।

ফাঁস হওয়া গোপন নথি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, সৌদি আরব এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফোন করেন বাইডেন এবং তাকে এই চিন্তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বলেন, সৌদি সরকার যদি তেলের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে—সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তার ‘পরিণতি’ সৌদিকে ভোগ করতে হবে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

তবে বাইডেনের এই হুঁশিয়ারির জবাবে যুবরাজ বলেন, তেলের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্তকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যদি সৌদির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়— সেক্ষেত্রে দেশটির সঙ্গে যাবতীয় অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে সৌদি এবং সেক্ষেত্রে তা ওয়াশিংটনের জন্য আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।

তারপর এই প্রসঙ্গে উভয় নেতার কথাবার্তা আর এগোয়নি। ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত অক্টোবরেই জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস করেছে সৌদি আরব। বাইডেনও এই কারণে সৌদির ওপর কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেননি।

প্রসঙ্গত, সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক এবং ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে সৌদি যুবরাজের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন বাইডেন। যুবরাজ যদিও বলেছেন, খাসোগি হত্যায় তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাতে আস্থা রাখতে পারেননি।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ বাহিনী সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ওপেক প্লাসের সূত্রে রাশিয়ার সঙ্গে সৌদির ঘনিষ্টতায় উদ্বেগ বোধ করছিল বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, সেই উদ্বেগ থেকে মোহাম্মদ বিন সালমানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জো বাইডেন।

news24bd/ARH