রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে নেই কয়লা সংকট, আরও এলো ২৬ হাজার মে.টন

রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে নেই কয়লা সংকট, আরও এলো ২৬ হাজার মে.টন

বাগেরহাট প্রতিনিধি

দেশে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিংয়ের মধ্যে কয়লা সংকটের কারণে পায়রা ও বাঁশখালী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বন্ধ হয়ে গেলেও উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে বাগেরহাটের রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।

আগামী এক মাসের কয়লা মজুদের মধ্যে এই মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের আউটার এ্যংকোরেজে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি জে হ্যায়’।


ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি শনিবার (১০ জুন) ভোর ৫টায় মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ার-১১ নম্বর বয়ায় নোঙ্গর করে। সকাল থেকেই এ জাহাজটি আউটার এ্যংকোরেজে হতে লাইটার জাহাজে কয়লা খালাস কাজ শুরু হয়েছে।

চীনের এই জাহাজটি থেকে খালাসকৃত এ কয়লা লাইটার জাহাজে (নৌযান-কার্গো/কোস্টার) করে নেয়া হচ্ছে তাপ রামপাল মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে। তারপর এসব কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কোল সেডে মজুদ রাখা হচ্ছে।

কয়লা সংকটের কারণে দেশের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পটুয়াখালীর পায়রা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের পর দেশে চরম বিদ্যুৎ লোডশেডিং শুরু হয়। দেশে এমন চরম দুঃসংবাদের মধ্যেও আশার আলোতে হিসেবে দেখা দিয়েছে কয়লা ভিত্তিক রামপাল মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।

দুটি ইউনিটের ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেটির ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি এবছরের জুনে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মায়ে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, এর আগে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটের কারণে এক মাস বন্ধ ছিলো এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি। দ্বিতীয়বার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে ২৩ দিন বন্ধ থাকে রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

কয়লাবাহী এমভি জে হ্যায় জাহাজের শিপিং এজেন্ট দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান টগি শিপিং এন্ড লজিস্টিক লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, আমদানিকৃত রামপাল মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে চীনের পতাকাবাহী এমভি জে হ্যায় জাহাজটি গত ২১ মে ইন্দোনেশিয়া থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসার ১৯ দিনের মাথায় জাহাজটি শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় পৌঁছায়। এরপর সেখান
থেকে জাহাজটি শনিবার ভোর ৫টার দিকে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার-১১ নম্বর এ্যাংকোরেজে ভিড়েছে। আউটার এ্যংকোরেজে হতে লাইটার জাহাজে কয়লা খালাস কাজ শুরু হয়েছে।

এর আগে গত ১৬ মে বাংলাদেশী পতাকাবাহী এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেসে জাহাজে করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ও ২৯ মে এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি জাহাজে করে ৩০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা মোংলা বন্দরের মাধ্যমে
রামপাল মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে আনা হয়।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম জানান, বর্তমানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনো কয়লা সংকট নেই। এক মাসের পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে। কয়লা আমদানিও করা হয়েছে। শনিবার ভোরে এই মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আরও ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের আউটার এ্যংকোরেজে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জে হ্যায়।

news24bd.tv/FA