লক্ষ্মীপুর শহরের একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধারের দাবি জানিয়ে সোমবার (১২ জুন) সকাল ৯টা থেকে জেলার সব স্বর্ণের দোকান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবেন তারা। এর আগে জেলার আর. কে শিল্পালয়ের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে তার দোকানের স্বর্ণ লুট করে ডাকাতদল।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
বাজুস লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সদস্য ও স্বর্ণালয় নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক অজয় রায় বলেন, ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দুইজন ছাড়া আর কোনো ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাই আমরা ডাকাতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে এবং লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জেলার সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাজুস জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল বলেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং জেলার সব বাজার পর্যায়ে প্রায় ৮ শতাধিক স্বর্ণের দোকান রয়েছে। সোমবার সকাল থেকে সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। বাজুসের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। দোকান মালিক এবং কর্মচারীরা মানববন্ধনে অংশ নেবে।
তিনি বলেন, পুলিশ যাতে দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়, আমরা সে দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে লুণ্ঠিত মালামালগুলো যাতে উদ্ধার করা হয়। প্রশাসনের কাছে আমাদের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বুধবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাত থেকে আটজনের একটি ডাকাতদল ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে ‘আর. কে. শিল্পালয়’ নামে ওই সোনার দোকানে হানা দেয়। ডাকাতদল এসময় দোকানের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করে এবং সব সোনার গহনা লুট করে নিয়ে যায়। অপুকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাতেই তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কিছু ককটেল উদ্ধার করে।
এদিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় ডাকাতদলের পিকআপ ভ্যানের চাপায় সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী নিহত হয়। এতে আহত হন ইসমাঈল হোসেন নামে আরও এক পথচারী।
সেখান থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ডাকাতদলের সদস্য সবুজ ও মনসুর ওরফে রনিকে আটক করে পুলিশ। তাদের মধ্যে সবুজের বাড়ি বরগুনা জেলায় এবং মনসুরের বাড়ি নরসিংদীতে। তাদের কাছ থেকে তিন ভরি চার রতি আট পয়েন্ট স্বর্ণ জব্দ করা হয়। দোকানের মালিকের দাবি, ডাকাতদল আনুমানিক ২০ ভরি স্বর্ণ লুট করে নিয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় সদর থানায় তিনটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি ডাকাতির, একটি বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি সড়ক দুর্ঘটনার। এসব মামলায় আটক দুজনসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে আসামি করা হয়। আটক দুজনকে শুক্রবার (৯ জুন) গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার এখনো উদ্ধার হয়নি।
news24bd/ARH