শিশুর সম্পদ অন্যকে উপহার দেওয়া যাবে?

প্রতীকী ছবি

শিশুর সম্পদ অন্যকে উপহার দেওয়া যাবে?

 মাইমুনা আক্তার

নেক সন্তান আল্লাহর অপূর্ব নিয়ামত। তাদের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মা-বাবাকে ইহকাল ও পরকালে সম্মানিত করেন। পবিত্র কোরআনে সন্তান-সন্ততিকে জীবনের শোভা বলা হয়েছে। হাদিসের ভাষায় তাদের আখ্যা দেওয়া হয়েছে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো লোক মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন ধরনের কাজের ফল (অব্যাহত থাকে)। (প্রথম) সদকায়ে জারিয়া; (দ্বিতীয়) ওই ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়; (তৃতীয়) উত্তম সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩৬৫১)
তাই সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই নৈতিক শিক্ষা দেওয়া, দ্বিনের পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করা মা-বাবার দায়িত্ব।

পাশাপাশি সন্তানের কোনো হক যেন নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকাও জরুরি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মা-বাবা নিজেদের অজান্তে সন্তানের হক নষ্ট করে বসেন। তার মধ্যে অন্যতম একটি তুলে ধরা হলো—
অনেক সময় আমাদের আত্মীয়-স্বজন আমাদের সন্তানদের বিভিন্ন উপহার দিয়ে থাকেন, কেউ জামা-কাপড় দেন আবার কেউ গয়না বা টাকা-পয়সা ইত্যাদিও দিয়ে থাকেন। যেগুলো সাধারণত মায়েদের জিম্মায় থাকে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা এমনিতেই তাঁরা সেই জিনিসগুলো অন্য আত্মীয়র বাচ্চাকে উপহার দিয়ে দেন, যা তাঁর সন্তানকে অন্যরা দিয়েছিল। এভাবে সন্তানের সম্পদ অন্যদের দিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ বাচ্চাদের জন্য উপহার হিসেবে যা কিছু আসে সেগুলোর মালিক তারাই। মা-বাবা সেগুলো ব্যবহার বা কাউকে দান করা বৈধ নয়। যদি সেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে সেগুলো বিক্রি করে তার মূল্য বাবদ অর্জিত টাকা বাচ্চার প্রয়োজনে ব্যয় করতে পারবে।
(ফাতাওয়ায়ে কাজি খান : ৩/১৪৮, তানকিহুল ফাতাওয়াল হামেদিয়্যাহ : ২/৯৩, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১২/১৪৫)

একান্ত যদি সেই জামা-কাপড় ইত্যাদি নষ্ট না করে অন্য কাউকে উপহার দেওয়ার ইচ্ছা হয়, তাহলে সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে সে পরিমাণ টাকা সন্তানের কোনো কাজে ব্যয় করার জন্য রেখে দিতে পারেন। এবং ওই জিনিস অন্য আত্মীয়কে উপহার হিসেবে দিতে পারেন। মহান আল্লাহ এমন সূক্ষ্ম বিষয়গুলোতে আমাদের আরো সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন

এই রকম আরও টপিক