বাঁচানো গেল না ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া পোশাক কর্মী শামছুন্নাহারকে (৩৫)। ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ’র রেজিস্টার ডা. খায়রুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, শামছুন্নাহারের মাথার আঘাত গুরুতর ছিল।
ডা. খায়রুল জানান, রোববার সকালে তাকে আবারও সিটিস্ক্যান করানোর কথা ছিল। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেটাও করা যায়নি। এমনকি শনিবার নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা অস্ত্রপোচার করতে চাইলেও সম্ভব হয়নি।
নিহত শামছুন্নাহার শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় অবস্থিত রিদিশা পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়ার মেয়ে। চাকরির সুবাদে সে বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ি নয়নপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। তার দুইটি সন্তান আছে।
নিহতের ছেলে মো.সজিব বলেন, আমাদের দুই ভাইকে পড়াশোনা করানোর জন্য ৮ থেকে ১০ বছর ধরে মা গার্মেন্টসে কাজ করছিলেন। যাদের কারনে আমারা মায়ের এই অকাল মৃত্যু হয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
জানা যায়, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পোশাক কারখানায় কাজ শেষে হাইওয়ে মিনিবাসে বাসায় ফিরছিলেন ওই নারী। পথে ভালুকা সিডস্টোর এলাকায় অন্য যাত্রীরা নেমে যান। এসময় শামসুন্নাহার একা থাকায় চলন্ত বাসেই ধর্ষণের চেষ্টা চালান চালক, তার সহকারী ও বাসের সুপারভাইজার। এসময় প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নারী। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা প্রথমে তাকে মারধর করেন, তারপর চলন্ত বাস থেকে
ফেলে দেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শামসুন্নাহারকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা প্রথমে ভালুকা সিডস্টোরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা জানান, এ ঘটনার পরপরই হাইওয়ে পুলিশ বাসটি আটক করেছে। পরে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে চালকের সহকারী আরিফ (২০) ও সুপারভাইজার আনন্দ দাসকে (১৯) ভালুকা ও চালক রাকিবকে (২১) ত্রিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
news24bd.tvতৌহিদ