দাঁত পড়ে গেলে কী করবেন?

প্রতীকী ছবি

দাঁত পড়ে গেলে কী করবেন?

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে অনেকেই অকালে দাঁত হারাতে পারেন। দাঁত পড়ে গেলে শূন্যস্থানটিতে দ্রুত কৃত্রিম দাঁত না লাগালে নানা ধরণের সমস্যা হতে পারে। এতে পাশের ভালো দাঁতগুলোও দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া দাঁত না থাকায় খাবার ঠিকমতো চিবিয়ে খাওয়া হয় না, যা হজমে ব্যাঘাত ঘটায়।

তাই দ্রুত কৃত্রিম দাঁত লাগিয়ে নেবার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এছাড়া বৃদ্ধ বয়সে অধিকাংশ মানুষের একাধিক, কখনো প্রায় সবগুলো দাঁত পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে খাবার খেতে তাদেরকে অনেক বেগ পেতে হয়। এক্ষেত্রে পুরো দুই পাটি দাঁতই চাইলে বাঁধিয়ে নেওয়া যায় যা দিয়ে অনায়াসে স্বাভাবিক খাবার-দাবারের কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব।
পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যটি দাঁতের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন কিনা সেটা দেখার দায়িত্বতো অন্য সবারই। আসুন জেনে নিই দাঁত বাঁধানো সম্পর্কে ডেন্টিস্টরা কী বলেন-

নানা কারণে অনেকেই অকালে দাঁত হারান। এটা শুধু খাবার চিবানোর ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করে না, সৌন্দর্যহানিও ঘটায়। এসব ক্ষেত্রে কেউ কেউ দন্ত চিকিৎসকের কাছে যান। কেউ আবার যান না ভয়ে। অনেকে আবার জানেনই না চাইলে তিনি ফিরে পেতে পারেন অনেকটা আগের মতোই দাঁত। অথচ, বর্তমানে দাঁতের অনেক আধুনিক চিকিৎসা বের হয়েছে। কৃত্রিম দাঁত লাগানোর দুটি প্রক্রিয়া আছে। একটা হলো ফিক্সড বা স্থায়ী পদ্ধতি, অপরটা রিমুভাবল (যখন তখন খোলা যায়) পদ্ধতি। রিমুভাবল পদ্ধতি অনেক আগে থেকে চলে আসছে। খাবার সময় বা খাবার পর খুলে পরিস্কার করতে হয়। অনেকের আবার একটা দাঁতও থাকে না। তাদের উপরের নিচের পুরো পাটিই লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবার খাবার পরে খুলে পরিস্কার করতে হয়।  

দন্ত চিকিৎসকরা জানান, ফিক্সড বা স্থায়ী পদ্ধতি আছে কয়েক ধরণের। যেমন ব্রিজ, ইমপ্লান্ট, ক্রাউন ইত্যাদি। যেমন কারও একটা দাঁত ভেঙে গেছে, অর্ধেক আছে, অর্ধেক নেই। কিন্তু সে আগের রূপ ফিরে পেতে চায়। সেটাকে রুটক্যানাল করে ক্যাপ করে দিলে আগের মতো সুন্দর দাঁত হয়ে যাবে। কারও একটা বা দুইটা দাঁত নেই, আশেপাশের দাঁতগুলো আছে। তখন পাশের দুইটা দাঁতের সাপোর্ট নিয়ে ব্রিজ করা যায়। এক্ষেত্রে পাশের দুইটা দাঁত ছেটে অথবা ক্ষেত্রবিশেষ রুটক্যানাল করে তিন দাঁতের হিসেবে ক্যাপ তৈরি করা হয়। এরপর সেটা বসিয়ে দেওয়া হয়। এটা দাঁত বসানোর একটা আধুনিক পদ্ধতি। তবে অনেকেই চান না একটা দাঁত নেই বলে পাশের দুইটা দাঁতকে এর মধ্যে টেনে আনতে। ভালো দুইটা দাঁতকে কেটে ছোট করে ক্যাপ বসাতে চান না। এক্ষেত্রে আরও আধুনিক পদ্ধতি আছে, যেটাকে বলে ইমপ্লান্ট। এটা কিছুটা ব্যয়বহুল। এই পদ্ধতিতে যেখানে দাঁত ছিল সেখানে একটা কৃত্রিম শিকড় বসানো হয়। শিকড়টা হাড়ের ভেতরে ঢুকিয়ে তার ওপর কৃত্রিম দাঁত বসিয়ে দেওয়া হয়। এটা অনেকটা স্বাভাবিক দাঁতের মতো কাজ করে। দেখেও বোঝা যায় না। পাশের দাঁতেরও কোন সমস্যা করে না। কেউ চাইলে পুরো মাড়িতেই এভাবে সব দাঁত বসিয়ে নিতে পারে।

স্বর্ণের দাঁত লাগানো কি ভালো?

আগের দিনে অনেকেই স্বর্ণের দাঁত লাগাতেন। কোথাও গল্পের সময় কারণে-অকারণে হেসে দিতেন, যাতে আশপাশের লোকজন সেটা দেখতে পারে। এটাকে অনেকেই আভিজাত্যের ব্যাপার হিসেবে দেখতেন। বিশ্বের কাউকে কাউকে আবার হীরা দিয়েও দাঁত বাঁধাতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থোডন্টিক্স বিভাগের গবেষণা সহকারি ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্বর্ণ দিয়ে দাঁত বাঁধানো মূলত শখের বিষয়। এটা আগেকার দিনে অনেক বেশি দেখা যেত। তবে এখনকার দিনে তেমন একটা হয় না। চিকিৎসকরা এটা না করার জন্য পরামর্শ দেন। যদিও এটা ক্ষতিকর নয়, তবে বিষয়টা বিলাসিতা। এছাড়া দাঁতের যে কাজ সেই কাজ শতভাগ স্বর্ণের দাঁত দিয়ে করা যায় না। দাঁতের কাজ চিবানো। আর এই কাজের জন্য স্বর্ণ অতটা শক্ত ধাতু নয়। ক্ষেত্রবিশেষ সামনের দাঁতে এটা করা যেতে পারে, তবে মাড়ির দাঁতের জন্য এটা মোটেও যৌক্তিক নয়।  

সম্পর্কিত খবর