ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের মৌসুম আসতেই বেড়েছে মশা নিধনে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দাম ক্ষেত্রবিশেষে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া কিছু পণ্য কমে বিক্রি হলেও গায়ের দাম অযৌক্তিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগ ঠেকাতে এখন থেকেই মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সরেজমিন রাজধানীর চকবাজার, নিউমার্কেট, পীর ইয়ামেনী মার্কেট, গুলিস্তান, তালতলা নিউমার্কেট, নতুন বাজারসহ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি দোকানে দেখা গেছে, অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে মশারি, স্প্রে, কয়েল ও বৈদ্যুতিক কয়েল এবং ব্যাটের দাম ও বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে।
চকবাজারে কয়েলের পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি মিলে অর্ধশতাধিক ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ডের মশার কয়েল পাওয়া যায়। এরমধ্যে বেশিরভাগ দেশি কোম্পানির কয়েলে গায়ের দাম ১০০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে এসব কয়েলের দাম ৪০ থেকে ৮০ টাকা এবং খুচরা বাজারে প্রতি প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।
এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণিভুক্ত বুস্টার ও বিদেশি কয়েলের গায়ে কোনও দাম না থাকায় পাইকারি বাজারে নির্দিষ্ট দামে বিক্রি হলেও ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে এসব কয়েল ইচ্ছেমতো দামে বিক্রি করছেন। অথচ এক মাস আগেও এসব কয়েলের দাম অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।
গুলিস্তান ও পীর ইয়ামেনী মার্কেটে মশারির পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, তিন ফুট বাই ছয় ফুট সিঙ্গেল মশারির পাইকারি মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা; পাঁচ ফুট বাই ছয় ফুট ডাবল মশারি পাইকারিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ম্যাজিক মশারির দাম ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া মানভেদে শিশুদের ফোল্ডিং মশারির পাইকারি দাম ৩০০ থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব মশারিই নিউমার্কেটসহ রাজধানীর অন্যান্য বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে পাইকারির দ্বিগুণ দামে।
রাজধানীর গুলিস্তান ও নিউমার্কেটে মশারি ও কয়েল ছাড়াও মশা নিধনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ক্রিম, কীটনাশক, স্প্রে ও ইলেকট্রিক পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে ২৫০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত মসকিটো স্প্রে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। ৫০ গ্রাম থেকে শুরু করে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির মসকিটো ক্রিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ মাসখানেক আগেও এসব পণ্যের দাম অনেক কম ছিল।
গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে র্যাকেট বা কিলার ব্যাট, মসকিটো বেস্ট কিলার, মসকিটো বাল্ব, মসকিটো ভ্যাপ্রোজারসহ নানা ইলেকট্রনিক পণ্য। গত বছরের তুলনায় আমদানি করা এসব ইলেকট্রনিকস পণ্যের দামও বেড়েছে বেশ। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া র্যাকেট বা কিলার ব্যাট ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যেরও এমন দাম বেড়েছে। এ ছাড়া কিছু দেশি প্রতিষ্ঠান আমদানি পণ্য নিজেদের মোড়কে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতেও দেখা গেছে। এসব পণ্যের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা ডলার ও এলসি সংকটের কারণকে দায়ী করছেন।
news24bd/ARH