চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের এক চীন নীতির পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যার অর্থ চীনের কেবল একটি সরকারই আছে। আর যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতা সমর্থন করে না।
সোমবার বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এক চীন নীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।
বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মাঝে গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রথম কর্মকর্তা হিসাবে দুদিনের বেইজিং সফর করছেন ব্লিনকেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এই সফর ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বড় ধরনের অগ্রগতি না আনলেও অধিক স্থিতিশীলতা তৈরি করবে বলে আশা করছেন তারা।
গত কয়েক দশকের মধ্যে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা বনে যাওয়া শি জিনপিং সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ব্লিনকেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের এই সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তাইওয়ানকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের ‘উস্কানিমূলক পদক্ষেপ’ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না বলে ওয়াশিংটনের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করেন তিনি।
তাইওয়ানকে ঘিরে সংকটের শুরু হলে তার পরিণতি বিশ্বজুড়ে আরও ভোগান্তি তৈরি করবে বলে সতর্ক করে দেন ব্লিনকেন। তিনি বলেন, এমন কিছু হলে তা সম্ভবত ‘একটি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারে, যা সমগ্র বিশ্বকে প্রভাবিত করবে। ’
এর ব্যাখ্যায় মার্কিন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকদিন বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যিক কনটেইনারের প্রায় ৫০ শতাংশই চালান তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে যায়। আর বিশ্বে রপ্তানি হওয়া সেমি কন্ডাক্টরের ৭০ শতাংশই তাইওয়ানে তৈরি হয়।
ব্লিনকেনের সাথে বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনিপিং বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চীন-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের একত্রিত হতে পারাটা ‘মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ’
গত কয়েক মাসের ক্রমবর্ধমান অবনতিশীল যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের পর সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সাথেও বৈঠক করেছেন ব্লিনকেন।
বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অত্যন্ত অকপট ও ফলপ্রসূ হয়েছে। সম্পর্ক স্থিতিশীল করার পাশাপাশি তাইওয়ান নিয়ে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের মতো ইস্যুগুলো ছিল আলোচনার কেন্দ্রে।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে চীন প্রাণঘাতী অস্ত্র দেবে না বলে যে অঙ্গীকার করেছিল, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ব্লিনকেন বলেছেন, রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেবে না চীন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি, গুরুত্বপূর্ণ নীতি। সম্প্রতি শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্যান্য দেশকেও এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। আমরা এখনই এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও কিছু দেখতে পাইনি।
সূত্র: রয়টার্স।
News24bd.tv/aa