তিস্তার পানি আবারও বৃদ্ধি, দুর্ভোগে চরের মানুষ

তিস্তার পানি আবারও বৃদ্ধি, দুর্ভোগে চরের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

উজানে ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আবারও  বৃদ্ধি পেয়েছে। সকালে বিপদ সীমার ছুইছুই করলেও বিকেল পানি কমতে শুরু করেছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।  

একদিন পর আবারও তিস্তা পানি হুহু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতে চর অঞ্চলের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের সানিয়াজান নদী পার হতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজু (১৮) নিখোঁজ রয়েছেন। সে উপজেলার দালাল পাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।

বুধবার (২১ জুন) বিকেলে ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার দশমিক ২০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।

(স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। বুধবার ভোর ৬টা থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।  

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

একদিন পর আবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের  বসতবাড়িতে আবারও পানি উঠে টইটুম্বুর।  

পানি বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। পানি বৃদ্ধির ফলে রাস্তায় পানি উঠায় চলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।  

জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর,সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।  

গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের তালেব মিয়া বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এই বাধের রাস্তাটি হুমকির মুখে পড়ে। গতরাতে না ঘুমিয়ে জেগে ছিলাম কখন যে ভেঙ্গে যায়। আমাদের দাবি এই বাধটি যেন  দ্রুত সংস্কার করা হয়।  

গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, অত্র ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে প্রায় দু'হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পরিবারগুলোর জন্য এখনো পর্যন্ত সরকারী ভাবে সহযোগিতা পাওয়া হয়নি।  

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙ্গণ প্রবণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, তিস্তার পানি বাড়লেও বিকেলে তা কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক