এবার কুমিল্লা মেডিক্যালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

সংগৃহীত ছবি

এবার কুমিল্লা মেডিক্যালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের দাবি, চিকিৎসকদের দায়িত্বহীনতার কারণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় বুধবার (২১ জুন) ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের ভাষ্য- তদন্তে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

সোমবার (১৯ জুন) জন্ম নেওয়া ফুটফুটে নবজাতকটির বয়স মাত্র তিন দিন। কিন্তু তাঁর ভাগ্যে জোটেনি মায়ের ভালোবাসা আর আদর। কারণ সন্তান জন্মের পর দিনই হাসপাতালেই মারা যান তার মা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রসূতির মৃত্যু হলেও বিষয়টি জানাজানি হয়েছে বুধবার (২১ জুন)।

মারা যাওয়া ওই প্রসূতির নাম পারুল আক্তার। তিনি জেলার বরুড়া উপজেলার মোগগাও গ্রামের কৃষক মোস্তফা কামালের স্ত্রী।

স্বজনরা ও স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম দেন পারুল। আধা ঘণ্টা পর হঠাৎ তার পেট ফেঁপে উঠলে আবারও তাকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে।

এরপর রাখা হয় আইসিইউতে। পরের দিন মঙ্গলবার মারা যান পারুল। ভুল চিকিৎসায় পারুলের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা।

হাসপাতালে পারুলের স্বামীসহ স্বজনরা জানান, ওইদিন দ্বিতীয়বার ওটিতে নিয়ে ডাক্তাররা সেলাই খুলে পারুলের পেটে পানি ঢেলে ওয়াশ করেছিল। তবে কী কারণে করেছিল আমরা জানি না।

ওয়াশ করার পর আবারও সেলাই করে তারা। এরপর প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা তাকে ওখানে রাখে। সরকারি কোনো ওষুধও পাওয়া যায়নি তখন। আমাদের মনে হচ্ছে পারুলের পেটে কিছু রেখেই প্রথমবার সেলাই করা হয়েছিল। আমরা সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওইদিন পারুলের অপারেশনটি করার কথা ছিল হাসপাতালের গাইনি ইউনিটের প্রধান ডা. শিরিন আক্তারের। তবে অপারেশনটি করেছেন সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আফরোজা খানম।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ডা. আফরোজা খানম। তবে দক্ষ হাতেই অপারেশন করা হয়েছে বলে দাবি করে গাইনি ইউনিটের প্রধান ডা. শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, যিনি অপারেশনটি করেছেন তিনি আমার সবচেয়ে এক্সপার্ট ও এক্সপেরিয়েন্সড ট্রেইনি। সাধারণত এই ধরনের অপারেশনগুলো তারাই করে থাকেন। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ব্লিডিং বন্ধ করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোগীকে বাঁচাতে পারিনি। এখানে আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না।

বুধবার এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে আমরা ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে আমরা রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। এরপর রিপোর্ট অনুযায়ী দায়িত্বে অবহেলা থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক