মিষ্টির প্যাকেট ভর্তি টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে ধরা

মিষ্টির প্যাকেট ভর্তি টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে ধরা

অনলাইন ডেস্ক

দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাসে ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের সময় চারজনকে আটক করা হয়েছে। যার একজন দুদকের মানি লন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী, একজন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য।  

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দুদকের প্যাড, সিল, খাম ব্যবহার করে মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছিল।

দুদকের মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে এমন তথ্যে মতিঝিলের হিরাঝিল হোটেলে অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

ঘুষ নিতে যান দুদকের মানি লন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী গৌতম ভট্টাচার্য, পুলিশের এক চাকরিচ্যুত কনস্টেবল ও তার দুই সহযোগী।

মিষ্টির প্যাকেট ভর্তি টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে তাদের আটক করা হয়। ডিবি পুলিশ বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সই জাল করে আশিকুজ্জামান নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের একটি চিঠি তৈরি করেন গৌতম ভট্টাচার্য। দুদকে অভিযোগ নথিভুক্ত না করা হয় সেজন্যই লেনদেন হচ্ছিল ঘুসের।

পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ভিকটিম আশিকুজ্জামান একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী। বায়তুল মোকাররম মসজিদের কার্পেটের দোকানে ইমপোর্ট করা কার্পেট ও জায়নামাজ সরবরাহ করে থাকেন। গত ২০ জুন আশিকুজ্জামানের উত্তরার বাসায় দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের খামে ১টি নোটিশ নিয়ে একজন কথিত দুদক অফিসার যায়। কথিত চিঠিতে আশিকুজ্জামানের বাসায় অভিযোগ আনা হয় ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের চোরাচালান ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগ। এই ভয়ানক অভিযোগ শুনে ঘাবড়ে যান আশিকুজ্জামান।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, দুদকের নামে চাঁদাবাজির বেশ কিছু অভিযোগ যায় কমিশনের কাছে। এ চক্রের সদস্য সংখ্যা অনেক জানিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, সারাদেশেই রয়েছে এ চক্রের সদস্য। মূলত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে এই চক্রের সদস্যরা।

ডিবি প্রধান বলেন, ভিকটিমের বাসায় আসা কথিত দুদক অফিসার আশিকুজ্জামানকে হোয়াটসঅ্যাপে দুদকের কথিত আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। ওই কথিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভিকটিমকে আরও ভয় পাওয়ানোর জন্য তাকে বলে শূন্য থেকে সে আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। দুদকের জিম্মায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সকল প্রমাণ পাওয়া যাবে। এমতাবস্থায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। ঘাবড়ে যাওয়া আশিকুজ্জামানকে দফায় দফায় ফোন দেওয়া হয় হোয়াটসঅ্যাপে। ভয় দেখানো হয় সম্পত্তি ক্রোক করা, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করা, প্রিন্টেড ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে বেইজ্জতি করার।

তিনি আরও বলেন, এক পর্যায়ে দুদকের কথিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আশিকুজ্জামানকে মতিঝিলের হিরাঝিল হোটেলের দ্বিতীয় তলায় এসে সমঝোতার জন্য নির্দেশ দেয়। প্রথমে তার কাছে ৫ কোটি টাকা দাবি করা হয়। পরে সমঝোতা অনুসারে প্রথমে দুই কোটি টাকা দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে দিতে বলা হয় এক কোটি টাকা। বিনিময়ে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

দুদকের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা এ চক্রের সাথে জড়িত আছে কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

news24bd.tvতৌহিদ