এবার ‘ডাইরেক্ট গুলি’ করার হুমকি দিলেন ‘মিছিলে অস্ত্র হাতে’র ‌সেই এমপি

সংগৃহীত ছবি

এবার ‘ডাইরেক্ট গুলি’ করার হুমকি দিলেন ‘মিছিলে অস্ত্র হাতে’র ‌সেই এমপি

অনলাইন ডেস্ক

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানোর হুমকিদাতাদের’ সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়ে আলোচনায় এসেছেন বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এমপির আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মিছিলের পর এবার সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়ে দেওয়া বক্তব্য এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঁশখালী আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এমন বক্তব্য দেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান।

ভিডিওতে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা ১৯৭৫ সাল নয়, ২০২৩ সাল।

আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি, শেখ হাসিনার কর্মী। কিছুদিন আগে বিএনপির এক সমাবেশে প্রকাশ্যে এক নেতা বলেছিল, শেখ হাসিনাকে নাকি কবরে পাঠাবে। তার প্রতিবাদে বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের এই অফিস থেকে একটা মিছিল বের করেছিলাম। মিছিলের একটিমাত্র কারণ ছিল, যারা বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে, তাকে এবং তার দোসরদের প্রতিহত করা।

সেই মিছিলে অস্ত্র হাতে এমপির ছবি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সে জন্য পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে স্বাধীনতা দিয়েছে। তার মানে এই নয় যে আপনারা যা ইচ্ছা লিখবেন, আর আমরা পড়ব। সেদিন একটা পত্রিকার সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিল, আপনি কেন অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল করলেন। আজ এই মিটিং থেকে আমি প্রকাশ্যে বলছি, আমার পিস্তল অবৈধ নয়, লাইসেন্স করা পিস্তল। ’

‘আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে, না হলে দেশ আবার আগের মতো পিছিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীকে মারার হুমকি দিয়েছে, তাদের মারার জন্য আমি পিস্তল হাতে নিয়েছি। আবার বলছি, এটা ১৯৭৫ সাল নয়, ২০২৩ সাল। নেত্রীর ওপর যদি কোনো আঘাত আসে, কাউকে রেহাই দেব না। ’ এমপি বলেন, ‘আমি এখনো বলছি, যারা নেত্রীকে হুমকি দিয়েছে, কবরে পাঠাবে বলেছে, তাদের বিচার নয়, ডাইরেক্ট গুলি করে দেব। ’

পরে আলোচনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন অন্তত দুজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা গণমাধ্যমে মন্তব্য করতে রাজি হননি। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল গফুর। মোস্তাফিজুর রহমানের এমন বক্তব্য দেওয়া কি ঠিক হয়েছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। আপনি এমপি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। ’

উল্লেখ্য, গত ২২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মিছিলে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান পিস্তল নিয়ে সামনে ছিলেন। সেই ছবি ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

এর আগে ২০১৬ সালে নিজের পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহেদকে মারধর করেছিলেন স্থানীয় এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। ঘটনার পর এমপির বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্বাচন কর্মকর্তা।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে তাঁর অশ্লীল ভাষায় গালাগালির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ছাড়া ২০২০ সালের ২৭ জুলাই ‘বাঁশখালীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আলী আশরাফের মৃত্যুর পর বাঁশখালীতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিল না’—এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

news24bd.tv/আইএএম