‘পেট্রোকেমের বীজ ও ওষুধ ব্যবহারে সর্বস্বান্ত’ হাজারো ধান চাষি

‘পেট্রোকেমের বীজ ও ওষুধ ব্যবহারে সর্বস্বান্ত’ হাজারো ধান চাষি

অনলাইন ডেস্ক

বাগেরহাটে পেট্রোকেম বাংলাদেশ লিমিটেডের ধানের বীজ ও মাজরা পোকা দমনকারী ওষুধ ‘ফারটেরা’ ব্যবহারে সর্বস্বান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। গত বোরো মৌসুমে বীজে অঙ্কুরোধগম কম হওয়া এবং ফারটেরা ব্যবহারে পোকা দমন না হওয়ায় উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকের নিচে। এর ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা। পেট্রোকম কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।

 

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. কামরুজ্জামান টুকু জানান, এবারের বোরো মৌসুমে আমরা পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেড কোম্পানির ধানের বীজ ব্যবহার করি।

এই বীজে আমাদের কাঙ্ক্ষিত অঙ্কুরোধগম হয়নি। এরপরও আমরা কোনোভাবে চেষ্টা করেছি যাতে কিছু ধান হয়। পরে কোম্পানির প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাজরা পোকা দমনে একই কোম্পানির ফারটেরা নামক একটি ওষুধ ব্যবহার করি।

এই ওষুধে আমাদের ধানের পোকা তো মরেনি; বরং আরও বেশি পোকার আক্রমণ হয়েছে ধানের ক্ষেতে। যার ফলে আমাদের ফলন অনেক কম হয়েছে। যেখানে ৬৩ শতক জমিতে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ মন ধান হওয়ার কথা সেখানে আমাদের জমিতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মন ধান হয়েছে। অনেকের জমিতে ১০ মনের নিচেও হয়েছে। এই অবস্থায় আমরা দোকানির বাকি টাকাও পরিশোধ করতে পারিনি। বোরো মৌসুমটি আমাদের ১৬ হাজার কৃষকের শেষ হয়ে গেছে। আমরা একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি।  

এ সময় উপস্থিত কৃষকরা পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ক্ষতিপূরণ পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এবার বোরো মৌসুমে বাগেরহাটের কৃষকরা পেট্রোকেম-৬, পাইয়োনিয়ার অ্যাগ্রো-১৪ ধান ক্রয় করেছেন ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কীটনাশক ফারটোরা ক্রয় করেছেন সাড়ে
তিনশ টাকা কেজি দরে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের বাগেরহাটের ডিলার (সরবরাহকারী) ব্যবসায়ী সুমন শেখ বলেন, ১০ বছর ধরে পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাথে ব্যবসা করে আসছি। ২০২২ সালের জুন থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এক বছরে এক কোটি টাকার বেশি ওষুধ ও ২০ লাখ টাকার বীজধান বিক্রি করেছি। এর বেশিরভাগই বাকিতে
বিক্রি করেছি চাষিদের কাছে। চাষিরা এখন আমার কাছে ক্ষতিপূরণ চাচ্ছেন । আমি একদিকে যেমন কোম্পানিকে ৮০ শতাংশ টাকা দিয়েছি, অন্যদিকে চাষিদের মনরক্ষা করতে গিয়ে নিস্বঃ
হয়ে গেছি। বিষয়টি কোম্পানিকে জানানো হলেও, তারা কোনো সুরহা করেনি। চাষিদের বাঁচাতে এবং ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের পক্ষ থেকে আমাদের এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খোঁজ খবর
নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক