স্ত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ, স্বামীর যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

স্ত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ, স্বামীর যাবজ্জীবন

বাবুল আখতার রানা • নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় স্ত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেওয়ার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত স্বামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।  

আজ (৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার) দুপুরে নওগাঁ জেলা ও দায়রা জজ এবং অ্যাসিড দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম শহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।  

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম শহিদুল ইসলাম (৩১)।

তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।  

রায়ে বলা হয়, শহিদুল ইসলাম পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রী শামীমা আক্তারের শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছেন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হলেও তার শারীরিক সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দি ও উভয় পক্ষের শুনানি শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন অর্থাৎ আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

 

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ মামলার একমাত্র আসামি অ্যাসিডদগ্ধ নারী শামীমা আক্তারের স্বামী শহিদুল ইসলাম। আসামির বিরুদ্ধে অ্যাসিড সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ আইনের ৫ (ক) ধারায় রাষ্ট্রপক্ষ অপরাধ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। ’

‘অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর শহিদুল পুলিশ ও আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। ’ 

তিনি আরও বলেন, ‘অ্যাসিড সন্ত্রাসের অভিযোগে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদানেরও বিধান রয়েছে। কিন্তু অপরাধ সংঘটনের সময় আসামির বয়স (২৫ বছর) বিবেচনায় আদালত তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। ’

আদালত ও মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, আসামি শহিদুল ইসলাম অর্ধশিক্ষিত মানুষ। তিনি ছিলেন একজন হলুদ ব্যবসায়ী। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করা অবস্থায় পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মোকসেদুল ইসলামের মেয়ে শামীমা আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর শামীমা আরও পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু তার স্বামী শহিদুল ইসলাম এর বিরোধিতা করে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে পারিবাহিক কলহ সৃষ্টি হয়।  

পারিবারিক কলহের জেরে ২০১২ সালের ২০ মে রাতে নজিপুরে শ্বশুরবাড়িতে শয়ন কক্ষে ঘুমন্ত স্ত্রীর গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে শহিদুল। এতে শামীমার মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। এ ঘটনায় শামীমার বাবা মোকসেদুল ইসলাম পর দিন পত্নীতলা থানায় মামলা করেন।  

 

বাবুল▐ অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর