বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘোষণা শিক্ষক সমিতির

সংগৃহীত ছবি

বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘোষণা শিক্ষক সমিতির

অনলাইন ডেস্ক

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আগামী ১৫ জুলাই (শনিবার) থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।  

শুক্রবার (১৪ জুলাই) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া।

তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারীরা সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। গত ১১ জুলাই থেকে এই কর্মসূচি চলছে।

অথচ সরকার আমাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছেন না।

বজলুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে ১৫ জুলাই থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। এ সময় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে চলমান লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

বাজেটে শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে সভাপতি বলেন, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেসকো) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুমোদিত ১৪৬টি অনুচ্ছেদ সংবলিত শিক্ষকদের মর্যাদাবিষয়ক সনদের সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বা জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের নির্দেশনা আছে।

কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১১.৯২ শতাংশ বা জিডিপির ১.৮৩ শতাংশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ আরও কমিয়ে জাতীয় বাজেটের ১১.৫৭ শতাংশ বা জিডিপির ১.৭৬ শতাংশ করা হয়েছে। তাই ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সারা জাতি আজ চরমভাবে ক্ষুব্ধ।

সংবাদ সম্মেলনে মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাস, একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

এ অবস্থায় দেশ ও জনগণের বৃহৎ স্বার্থে দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষায় বিনিয়োগে ইউনেসকো-আইএলওর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন ও সবার জন্য শিক্ষাগ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদেসহ অন্যরা।

News24bd.tv/AA