গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যারা

প্রতীকী ছবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়

গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিস চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১০ অক্টোবর) সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে অবস্থিত ঢাকার ১নং অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিন সকালে কারাগার থেকে ৩১ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এ মামলায় মোট ৫২ জন আসামির মধ্যে অন্য মামলায় তিনজনের ফাঁসি আগেই কার্যকর হয়েছে। ফলে বিচারকাজ চলছিল ৪৯ জনের বিরুদ্ধে। এরমধ্যে ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে আছেন ৩১ জন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- ১.শাহদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, ২. মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু হোমাইরা ওরফে পীর সাহেব, ৩। মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, ৪। আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, ৫. হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া ৬.  হুজির সদস্য আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, ৭. মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, ৮. মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, ৯. মো. খলিল, ১০.  জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর, ১১.  মো. ইকবাল, ১২. লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, ১৩. তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া, ১৪.  হারিছ চৌধুরী, ১৫. কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ১৬.  মুফতি শফিকুর রহমান, ১৭. মুফতি আব্দুল হাই,  ১৮. রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু ও ১৯. আনিসুল মুরসালিন ওরফে মুরসালিন।

আরও পড়ুন: নিজের হাত-পায়ের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো একত্রিত করলাম

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ১. সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ২. উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, ৩. ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ৪. এনএসআই মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম, ৫.মাওলানা শেখ আবদুস সালাম,  ৬. আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ওরফে জিএম, ৭. মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, ৮. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, ৯. মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, ১০. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, ১১. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ১২. হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, ১৩. হোসাইন আহমেদ তামিম, ১৪. মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, ১৫. মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ওরফে খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ ১৬. মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন, ১৭. মো. আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে মো. ইউসুফ ভাট, ১৮. আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই ও জঙ্গিনেতা মাওলানা মো. তাজউদ্দীন (পলাতক) ১৯ হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ (পলাতক)।

এছাড়া অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে চলছিল আওয়ামী লীগের সমাবেশ। দিনটি ছিল শনিবার। একটি ট্রাকের ওপর তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী মঞ্চ। সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাকে ঘিরে ছিলেন দলীয় নেতারা। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ। কেঁপে ওঠে আশপাশের ভবনগুলো। মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিটকে পড়ে এদিক-ওদিক। মুহূর্তে সমাবেশস্থল পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে।

দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এক কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিল সেদিন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সেদিনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৪ জন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। কেউ হারিয়েছিলেন হাত, কেউ পা, কেউ দুটোই। কেউ হয়েছেন অন্ধ। দেহে স্প্রিন্টার বহন করে আজও দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন অনেকে।

সম্পর্কিত খবর