কাপ্তাই হ্রদে আরও এক মাস মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা

কাপ্তাই হ্রদে আরও এক মাস মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা

রাঙামাটি প্রতিনিধি:

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্র কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের উপরে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে আরও এক মাস। কাপ্তাই হ্রদের পানির স্থর কম ও মাছের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মা মাছ রক্ষা করতে সম্প্রতি এক সভার মাধ্যমে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও বিএফডিসি যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  

সভা সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ জুলাই রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধের উপর নিষেধাজ্ঞার তিন মাস পূর্ণ হবে। সাধারণত তিন মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

কিন্তু এ বছর ভিন্ন চিত্র। দীর্ঘ তিন মাসেও কাপ্তাই হ্রদের পানির স্থর বৃদ্ধি না পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে হচ্ছে রাঙামাটি বিএফডিসি ও জেলা প্রশাসনকে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকারের নিষেধাজ্ঞা আপাতত অব্যাহত থাকবে। মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, বংশবৃদ্ধি আর মা মাছ নিধন রক্ষা করতে হলে এ মুহূর্তে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার করা যাবে না।

যত দিন না হ্রদের পানি বৃদ্ধি হচ্ছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ থেকে জেলে ও মৎস্যজীবীদের বিরত থাকার নির্দেশান দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, কাপ্তাই হ্রদের মাছের সুরক্ষার জন্য কাজ করছে বিএফডিসি।  

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় কাপ্তাই হ্রদে এলাকায় সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ বাজারজাতকরণ, শুকানো ও পরিবহন সম্পন্ন নিষিদ্ধ রয়েছে। যাতে হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের ব্যাঘাত না ঘটে।  

একই সাথে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। মাছ শিকার শুরু হলেও নির্ধারিত অভায়শ্রম রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের বাংলো ঘাট, রাজবন বিহার ঘাট, লংগদু উপজেলা ইউএনও অফিস ঘাট এবং নানিয়ারচর ছয় কুড়ি বিল সব সময়ের জন্য মৎস আহরণ পূর্বের মতোই বন্ধ থাকবে।  

রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি  হ্রদে থেকে প্রতি বছর প্রাকৃতিক প্রজননকৃত মাছের মধ্যে শতকরা ৩১ ভাগ কাতাল, ১২ ভাগ রুই, শতকরা ৭ ভাগ মৃগেল ও ৫১ ভাগ কালি বাউশের প্রজনন হয়। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।  

দেশের রাজস্ব আয়ের বড় একটি অংশ হিসেবে কাজ করে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের মাছ। এবার আশা করা হচ্ছে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় কাপ্তাই হ্রদে ব্যাপক প্রজনন হয়েছে মাছের।  

এই রকম আরও টপিক