জাতিসংঘে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমা উপস্থাপন

জাতিসংঘে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমা তুলে ধরছেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

জাতিসংঘে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমা উপস্থাপন

লাবলু আনসার▐ নিউইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সুদৃঢ় সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তাই জনগণের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে দৃঢ়সংকল্প ও প্রতিশ্রুতির কথাই প্রতিফলিত হয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায়। ’ 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) ৭৩তম সাধারণ পরিষদের আওতাধীন দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ আলোচনায় রাষ্ট্রদূত মাসুদ বাংলাদেশের বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘শক্তিশালী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, সমগ্র সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে জনগণকেন্দ্রিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং রাজস্ব ও অন্যান্য খাত সংস্কারের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার সুনিপুণ দক্ষতায় বাংলাদেশের এই উন্নয়ন পরিক্রমা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের ৪৩তম অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ‘আমাদের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার ৭.৮৬%, দারিদ্র্য সীমা ২১.৪% এবং অতি-দারিদ্র্য সীমা ১১.৩%। ’
 
তার বক্তৃতায় আরও উঠে আসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, ৯০% জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা, ৯৯% জনগণ পয়নিষ্কাশন ও ৮৮% জনগণের নিরাপদ পানি প্রাপ্তি, জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছানো, উন্নয়নের বাহন হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নসহ শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ তার বক্তৃতায় বাংলাদেশে বাস্তবায়িত বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসমূহ- যেমন: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন।

স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এ বছর এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন দেশের উন্নয়ন ইতিহাসে একটি বিশেষ মাইলফলক।

’ 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।  

এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও অংশীদারদের সহযোগিতা বৃদ্ধি ও তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের হাই-লেভেল সপ্তাহ সমাপ্তির পর সাধারণ পরিষদের ৬টি প্রধান কমিটির পৃথক পৃথক কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘের অন্যান্য মূল অঙ্গসংগঠনের কাজও একইসাথে শুরু হয়েছে।  

ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে, অর্থাৎ বড়দিনের ছুটির আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের অন্যতম ব্যস্ত এই সময়কালে কমিটিগুলোর কার্যকম চলবে এবং এর প্রেক্ষিতে নতুন বছরের শুরুতে সাধারণ পরিষদের অধিকাংশ রেজ্যুলেশনসমূহ গৃহীত হবে।

 

লাবলু▐ অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর