লক্ষ্মীপুরের ঘটনাটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়: পুলিশ

সংগৃহীত ছবি

লক্ষ্মীপুরের ঘটনাটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়: পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক

লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সজীব নামে একজন নিহত হন বলে দাবি করছে বিএনপি। তবে আজ বুধবার (১৯ জুলাই) লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানান, ‘ওই হত্যাকাণ্ড বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির আগে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি স্থানে সংঘটিত হয়েছিল। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়।

’  

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিএনপির দাবির সঙ্গে সজীব হত্যাকাণ্ডের বর্ণনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদঘাটনে হত্যাকাণ্ডের সিসি ক্যামেরা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে সজীবে সঙ্গে রভাড়াটিয়া নোমান হোসেনের কিছু কথা হয়, যা অনুসন্ধানে পাওয়া যায়।

প্রকৃত ঘটনা হলো, বিএনপির সাথে পুলিশের যে স্থানে সংঘর্ষ  হয়, সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডের স্থানের দূরত্ব আনুমানিক দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার। বিএনপির পদযাত্রার রুটের সম্পূর্ণ বিপরীতে মূল সড়ক হতে দেড়শ গজ দূরে কলেজ রোডের পাশে ফিরোজা টাওয়ারের গলির মুখে ৪-৫ জন ছেলে সজীবকে উপর্যুপরি ছুড়িকাঘাত করতে থাকে।

একপর্যায়ে সজীব নিজেকে বাচাঁতে দৌড়ে ফিরোজা টাওয়ারের এসএস গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠে ফ্ল্যাট বাসার নোমান হোসেনের পাশের ফ্লাটের দরজার সামনে শুয়ে পড়ে।

মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবের নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করা হয়। রাজনৈতিক প্রোগ্রামে এসেছে কি না জানতে চাওয়া হলে সজীব জানান, তিনি কোনো প্রোগ্রামে আসেননি। সজীবকে এভাবে আঘাত করার কারণ হিসেবে জানান, পাওনা টাকা এবং বিবাহ সংক্রান্তে তারা হামলা করেছে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচির কোনো সত্যতা নেই। ইটা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

নোমান ও তার ছেলে সজীবের রক্তাক্ত দেহে পড়ে থাকা অবস্থায় ৯৯৯-এ কল আসে। পুলিশ কল রেসপন্স করলেও বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালীন সে মুহূর্তে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না। পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয় পুলিশ। নোমান ইতোমধ্যে তার পরিচিত ৩-৪টি অ্যাম্বুলেন্সের মালিককে কল করলেও, এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও রাস্তা অবরুদ্ধ থাকায় সবাই আসতে অপরাগতা প্রকাশ করে।

উচ্ছৃঙ্খল বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জ্বালাও পোড়াও ভাঙচুর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ দ্রুত সেই হত্যাকাণ্ডের স্থলে গিয়ে লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে।

বিএনপি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রচার চালায়। ইতোপূর্বে ভিন্ন একটি ছবি নিয়ে লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে গুজব ছড়ায়। যার সত্যতা আদৌ পাওয়া যায়নি।

নোমানের ভাষ্যমতে, মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবের কাছ থেকে পাওয়া যে তথ্য সে আমাদের দিয়েছে, তা যাচাই করা হচ্ছে।
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক