দুই নারীকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

সংগৃহীত ছবি

দুই নারীকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের মণিপুর রাজ্যে দুই নারীকে নগ্ন করে গ্রাম ঘোরানোর ভিডিও প্রকাশ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় মূল হোতাসহ এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা মেইতেই সম্প্রদায়ের। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভের মাঝে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, সবশেষ দুইজন গ্রেপ্তারের পর এই ঘটনায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে।

বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনার মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম হুইরেম হেরাদাশ সিং। তাকে থৌবাল জেলা থেকে গ্রেপ্তারে করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘটনাটির তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বীরেন এনডিটিভিকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি ও রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। অপরাধীদের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্মৃতিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

২৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে গত ৪ মে। তফসিলি উপজাতি ইস্যুতে এর একদিন আগেই শুরু হয় সংখ্যাগুরু মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ। আর সে কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। সেই সংঘর্ষ এখনো চলছে। এর মধ্যেই বুধবার ছড়িয়ে পড়ে দুই নারীর নগ্ন ভিডিও। ভিডিও দেখা গেছে সবুজ টি-শার্ট পরা মূল হোতা হুইরেম হেরাদাশ সিং দুই নারীর একজনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।

মণিপুরে নারী নির্যাতন ইস্যুতে ২০ জুলাই তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের বর্ষা অধিবেশন শুরু আগে তিনি বলেন, আমি এই ঘটনায় সংক্ষুব্ধ। আমি তীব্র ক্ষোভ জানাচ্ছি। মণিপুরের ঘটনায় সমাজ আজ লজ্জিত। মণিপুরের দুই কন্যার সঙ্গে যা হয়েছে তা কখনোই ক্ষমা করা হবে না। দোষীরা কোনোভাবেই পার পাবে না। আইন সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে এগোবে।

একই সঙ্গে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যেন তারা এই ঘটনার ভিডিও শেয়ার দেওয়া বন্ধ করে দেয়।  

মণিপুরে কুকি আদিবাসী নেতাদের ফোরাম (আইটিএলএফ) নিশ্চিত করেছে, সেই দুই নারী কুকি আদিবাসী। আইএলটিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুধু নগ্ন করেই ঘোরানো হয়নি, তাদের একটি মাঠে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণও করা হয়।

সম্প্রতি ভিডিওটি ভাইরাল হলেও আইটিএলএফের বিবৃতি অনুসারে ঘটনাটি ৪ মে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় ঘটেছিল। সেই সময় মেইতি জনতা তাদের উলঙ্গ অবস্থায় ধর্ষণ করার জন্য ধানক্ষেতের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, সেখানে উপস্থিত পুরুষেরা ক্রমাগত তাদের হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করছে এবং নারী দুজনকে অনুনয় বিনয় করতে দেখা গেছে।

সম্প্রতি মেইতি গোষ্ঠীর সঙ্গে কুকিদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিজেপি শাসিত মণিপুরে সম্প্রতি দুই সম্প্রদায়ের লড়াইয়ে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

News24bd.tv/AA