আবার কি শুরু হলো আগুন সন্ত্রাস? 

সংগৃহীত ছবি

আবার কি শুরু হলো আগুন সন্ত্রাস? 

মাসুদা লাবনী

রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসানসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির ৯০ জন নেতা কর্মীকে আঠক করা হয়েছে। আগুন দেয়া বাসের চালক জানায়, কোন মিছিল ছিলো না, তিনজন মোটরসাইকেলে এসে আগুন নেয়।

শনিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে দক্ষিণ মাতুয়াইলের সান্টু ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী আরও একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

পরে বেলা দুইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

সাব্বির আহমেদ নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বাসটি পাম্প থেকে বের হচ্ছিল। বাসে শুধু চালক ছিলেন। দুজন লোক এসে চালককে বাস থেকে জোর করে নামান।

তারপর বাসে আগুন দিয়ে ভিডিও করেন। এরপর একটি মোটরসাইকেল আসে। তিনজন সেই মোটরসাইকেলে চলে যায়।

বাসটির চালক মো. সানাউল্লাহ বলেন, বাজিতপুর থেকে আসছি। গুলিস্তান যাত্রী নামাইছি। এখানে আমরা সব সময় তেল নিই, তাই আসছি। গাড়িটা ব্যাক দিয়া সোজা করতে লইছিলাম। এ সময় হোন্ডা লইয়া তিনজন লোক আসল। দুজন গাড়িতে উঠল। তারা বলল, নামবি নাকি তর ওপরে প্যাট্রল মারমু। আমি স্টার্ট বন্ধ কইরা দিছি। লাফ দিয়া পইড়া গেছি। ওরা আগুন লাগাই দিয়া বাইকে করে চলে গেছে। এ সময় পুলিশ পাঁচ-ছয় হাত দূরেই ছিল। দুই পাশেই পুলিশ ছিল।

এরআগে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশ পথের মতো শনিবার সকাল ১১টার পর মাতুয়াইলে বিএনপির নেতাকর্মীরাও অবস্থান নেয়। ডিএমপির অনুমতি না থাকায় পুলিশ কর্মসূচিতে বাঁধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে পরপর চারটি বাসে দেয়া হয় আগুন। যাত্রীবাহীসহ তিনটি বাস পুড়ে যায়। হঠাৎ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় মাতুয়াইলে আরও দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

রাজনৈতিক কর্মসূচি নামে অস্থিরতা আর অরাজক পরিস্থিতিতে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানান সাধারণ মানুষ। পুলিশের পক্ষ জানানো হয়, তাদেরসহ অন্তত ৩০টি সাধারণ গাড়ি ভাংচুর করেছে আন্দোলনকারীরা।

উপকমিশনার ফারুক হোসেন জানান, অবস্থান কর্মসূচি পালনের আগে বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিএনপিকে তারা অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে গতরাতে বিএনপিকে জানানো হয়েছিল যে, তারা রাস্তা অবরোধ করতে পারবে না। তাই এটি ছিল বেআইনি সমাবেশ। তারপরও তারা রাজপথে ককটেল শুনেছে পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে। কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। ২০ গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আক্রমণকারীদের নিবারণ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে। যারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে তাদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফারুক হোসেন বলেন, যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে। আরো অনেকে গ্রেফতার করা হবে। যারা বিশৃঙ্খলা করেছেন তাদের সবার নামে মামলা দেওয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, হঠাৎ করে বিএনপি কেন এমন আন্দোলনের ডাক দিয়ে গাড়ি ভাংচুর করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুমতি না নিয়ে এবং ১৪৪ ধারা ভেঙে যারা পুলিশের উপর হামলা করেছে তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

News24bd.tv/AA