সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশের ক্ষমতা বেড়েছে উল্লেখ করে সম্পাদক পরিষদ জানায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শেষ মুহূর্তে এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে সংবাদপত্রের কার্যালয় ও সংবাদপ্রতিষ্ঠানগুলোর দপ্তরে প্রবেশ করা, তল্লাশি চালানো, বন্ধ করে দেওয়া, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক জব্দ করা, এমনকি পরোয়ানা ছাড়াই সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশের ক্ষমতা আরও বেড়েছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদের লিখিত বক্তব্য পড়েন শোনান ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান প্রমুখ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সংবাদ মাধ্যমের বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিপন্থী কালাকানুন আখ্যায়িত করে সম্পাদক পরিষদ জানায়, এটিকে আইনে পরিণত করায় আমরা যারপরনাই হতাশ, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। এটি মুক্তিযুদ্ধের অন্তর্নিহিত চেতনার পরিপন্থী।
শ্যামল দত্ত বলেন, আমাদের মৌলিক আপত্তি, দফায় দফায় আলোচনা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুইবার বৈঠক সত্ত্বেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাস করা হয়েছে।
আইনটি নিয়ে পরিষদ জানায়, তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন, পরিমার্জনের লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হবে।
‘সম্পাদক পরিষদকে তিনজন মন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমরা মনের করি, এটি সেই প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ। ’
সম্পাদক পরিষদ আরও জানায়, শুরু থেকেই সম্পাদক পরিষদ এ আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল, যেগুলো স্বাধীন সাংবাদিক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, আমরা আইনটি বাতিল চাইনি। কতগুলো বিশেষ ধারার আমূল পরিবর্তন চেয়েছি। এই পরিবর্তন সম্ভব। আমরা আশা করব, ওই ধারাগুলো সংশোধন করে আইনটি সংশোধন করা হবে। ’
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)
