যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায় ইউক্রেন

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায় ইউক্রেন

ডয়চে ভেলে

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লাগাতার সংঘর্ষের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চাইছে ইউক্রেন। মূলত সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের আগের ধাপ হিসেবে সেই আশ্বাস আদায় করতে ওয়াশিংটনে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিয়েভ।

ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে জোরালো সংঘর্ষ চলছে। রাতে খারকিভ শহরে রুশ বাহিনী জোরালো হামলা চালিয়েছে।

এখনও হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। দুই দেশই সাফল্যের দাবি করছে।

ইউক্রেনের মতে, প্রতিরোধ চালানোর পাশাপাশি কিছু এলাকা রুশ বাহিনীর দখল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করছে, ইউক্রেনের সৈন্যরা আর এগোতে পারছে না।

সেইসঙ্গে রাজধানী মস্কোয় ইউক্রেনের তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। তবে শহরের এক বহুতল ভবন ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি রোববারের দিনটিকে যুদ্ধক্ষেত্রে ‘ভালো ও শক্তিশালী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে বাখমুত শহরের কাছে ইউক্রেনের সৈন্যরা আরও এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। তবে মস্কোয় ড্রোন হামলার দায় স্বীকার না করলেও জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ এবার ধীরে ধীরে রাশিয়ার ভূখণ্ড, বিশেষ করে প্রতীকী কেন্দ্রে ফিরে যাচ্ছে।

ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেন, বাখমুত এলাকায় ইউক্রেনের সাফল্যের মুখে রাশিয়া মরিয়া হয়ে অন্য অঞ্চলে হামলা চালিয়ে চাপ বাড়াতে চাইছে। বিশেষ করে খারকিভ অঞ্চলে উঁচু অবস্থান থেকে ইউক্রেনের সৈন্যদের সরানোর চেষ্টা করছে মস্কো। যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া সেই এলাকা দখল করলেও পরে সেটা হাতছাড়া হয়ে যায়।

মালিয়ারের দাবি, খারকিভ অঞ্চলেও বাখমুতের মতো বিশাল সংখ্যক রুশ সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে।

এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের কারণে অদূর ভবিষ্যতে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়া যে অবাস্তব স্বপ্ন, ইউক্রেন তা বুঝতে পারছে। তবে ন্যাটোর কাছ থেকে নিরাপত্তার গ্যারেন্টি আদায়ের লক্ষ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে কিয়েভ।

আর সেই মতো আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়াশিংটনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলেনস্কির সরকার। প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক রোববার টেলিগ্রাম চ্যানেলে একথা জানিয়েছেন।

তার মতে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জয়ে সাহায্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্পষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদী আশ্বাস চায় ইউক্রেন। সেটা সম্ভব হলে রাশিয়া ভবিষ্যতে আর হামলা চালাতে পারবে না। ইয়েরমাকের মতে, ন্যাটোর পূর্ণ সদস্য হওয়ার আগের ধাপ হিসেবে এমন আশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, জুলাই মাসে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে শিল্পোন্নত দেশগুলোর গোষ্ঠী জি-সেভেন ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছে। আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে ইউক্রেন সংক্রান্ত শান্তি আলোচনায় জেলেনস্কির ‘শান্তি ফর্মুলা’ কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান।

ইউক্রেনের গোটা ভূখণ্ড থেকে রুশ সৈন্য প্রত্যাহারই সেই ফর্মুলার মূলমন্ত্র। তবে রাশিয়া সেই সম্মেলন সম্পর্কে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ইউক্রেনের জন্য কোনও রকম নিরাপত্তা গ্যারেন্টি দিতে আগ্রহী নয় মস্কো। আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট জেদ্দা শহরে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

News24bd.tv/AA