১৯তম কাজান আন্তর্জাতিক মুসলিম চলচ্চিত্র উৎসবের গণ-অর্থায়নে নির্মিত ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রটি মনোনীত হয়েছে। আগামী ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর, রাশিয়ার তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কাজান শহরে উক্ত উৎসবের ‘রাশিয়া - দ্যা ইসলামিক ওয়ার্ল্ড’ বিভাগে ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে।
তাতারিস্তানের প্রেসিডেন্ট রুস্তম মিনিখানভ এবং রাশিয়ার সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ে সহযোগিতায় ১৯তম কাজান আন্তর্জাতিক মুসলিম চলচ্চিত্র উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে।
এই বছর ‘রাশিয়া - দ্যা ইসলামিক ওয়ার্ল্ড’ বিভাগে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ইন্ডিয়া, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তুরস্ক, রাশিয়া ও উজবেকিস্তান এই নয়টি দেশের দশটি সিনেমা মনোনীত হয়ছে।
কাজান আন্তর্জাতিক মুসলিম চলচ্চিত্র উৎসবের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান এবং চলচ্চিত্র গবেষক নিনা কোচেলিয়েভা বলেন, “উক্ত বিভাগে পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ তিন লক্ষ রুবেল। নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলি মানব সম্পর্ক, পারিবারিক সম্পর্ক, নৈতিক দর্শনের সমস্যা, চরম পরিস্থিতিতে মানুষের বেঁচে থাকা এবং যোগাযোগের উপর আলোকপাত করে”।
এছাড়াও নির্বাচন কমিটির সদস্য দর্শনের অধ্যাপক ডক্টর তৈমুর শাইখুলিন বলেন, ‘রাশিয়া - দ্যা ইসলামিক ওয়ার্ল্ড’ বিভাগের চলচ্চিত্র গুলির পর্দায় মুসলিম আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের মূর্ত রূপ দেখা যাবে”।
‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রের পরিচালক খন্দকার সুমন বলেন, এমন একটি প্রেস্টিজিয়াস চলচ্চিত্র উৎসবে আমার প্রথম চলচ্চিত্র মনোনীত হওয়ায় আমি খুব আনন্দিত।
‘২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ বাংলাদেশ প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছিল গত ২৭ জানুয়ারি। এরপর গত মার্চ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছবিটির বিকল্প প্রদর্শনী হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে ২৪ তারিখে ভারতের ‘৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া’ চলচ্চিত্র উৎসবের গোয়া প্রদেশের পাঞ্জি শহরে চলচ্চিত্রটির ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার’ হয়।
‘সাঁতাও’ ৩ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’-র আয়োজনে ‘তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’-এ ‘সেরা প্রযোজনা পরিকল্পনা’ পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়। ৫ মার্চ ভারতের কেরালা প্রদেশের ত্রিশুল শহরে অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র উৎসব ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ত্রিশুল (ইন্ডিয়া)-এর ১৮তম আসরে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়।
এর আগে ছবিটি ২৩ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার ‘ফিফরিসি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিল। ৬ষ্ঠ নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘গৌতম বুদ্ধ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২৪তম রেইনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে।
কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্টির সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় গল্প চলচ্চিত্রের পর্দায় হাজির করেছে চলচ্চিত্র “সাঁতাও’’।
গণ-অর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’-এর মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল, ফজলুল হক। ‘‘সাঁতাও’’ চলচ্চিত্রের কাহিনী, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন, সহকারি পরিচালক হিসাবে ছিলেন শ্যামল শিশির, সুপিন বর্মণ ও মাসুদ রানা নকীব, সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট ও টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ, শব্দ গ্রহণে ছিলেন নাহিদ মাসুদ, চিত্রগ্রহণে ছিলেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন, আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ, গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক, শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান, পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আফ্রিনা বুলবুল, নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফাহিম রায়হান, রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন, পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।
চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোঃ সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফ্রিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মোঃ হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং তিস্তাবাজার এলাকাবাসী।