আধুনিক সুবিধায় দৃষ্টিনন্দন স্কুল-কলেজ হচ্ছে বসুন্ধরা আবাসিকে 

সংগৃহীত ছবি

আধুনিক সুবিধায় দৃষ্টিনন্দন স্কুল-কলেজ হচ্ছে বসুন্ধরা আবাসিকে 

অনলাইন ডেস্ক

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এবার শিক্ষায় অমিত সম্ভাবনার দ্বার খুলছে। আবাসিক এলাকার এন ব্লকে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সব সুবিধা-সংবলিত স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস। সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে দেশের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।

বর্তমান সরকারের সময়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা।

শিক্ষার মানোন্নয়নে নানামুখী ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বাংলাদেশকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। এরই অংশ হিসেবে সুবিশাল ক্যাম্পাস নিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এই ক্যাম্পাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।  

চারপাশে খোলা মাঠ, চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ, অবারিত সবুজের সমারোহে ঘেরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকে ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ।

 ১০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত সাততলা ভবনটির সামনেই আছে চার বিঘা খেলার মাঠ। প্রতিটি ফ্লোর প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুটের। মাঝখানে খুব সুন্দর একটি ঘোরানো সিঁড়ি।

পুরো ভবনটিতে সিঁড়ি আছে মোট পাঁচটি। ২৫ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি অত্যাধুনিক লিফট। দুই সারিতে তৈরি করা হয়েছে শ্রেণিকক্ষগুলো। দুই পাশ আর মাঝখানে মিলিয়ে তিনটি করিডর।

চারপাশেই খোলা বারান্দা হওয়ায় বাতাসের প্রবাহ সমান তালে। একেকটি শ্রেণিকক্ষ কমবেশি এক হাজার বর্গফুটের। মোট ৬৫টি নিয়মিত শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি কমনরুম আছে ছয়টি। আছে দুটি বিশেষায়িত শ্রেণিকক্ষ এবং সুবিশাল লাইব্রেরি। নিচতলায় সাড়ে আট হাজার বর্গফুটের একটি মাল্টিপারপাস হলরুম।

প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের চারটি দরজা। প্রচুর আলো-বাতাস প্রবেশের সুব্যবস্থা। পুরো ভবনের জন্য ২৮০টি ওয়াশরুম। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের কথা চিন্তা করেই প্রচুর আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।  

তারা আরও জানায়, শ্রেণিকক্ষের জন্য কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের (এসির) ব্যবস্থা রাখা হয়নি। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দরজা, জানালা ও ফ্যানের ব্যবস্থা আছে। একেকটা শ্রেণিকক্ষে সর্বনিম্ন ৪০ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবে। ক্যাফেটেরিয়া থাকবে বেশ বড় আকারের। অভিভাবকদের জন্য নিচতলায় আলাদা বসার জায়গা। ভবনের চারপাশে প্রচুর ফাঁকা জায়গা থাকবে। প্রতিটি ফ্লোরে আলাদা লবির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্লাসের গ্যাপে শিক্ষার্থীরা ওখানে দাঁড়াতে বা বসতে পারবে। আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের দিকে জোর দিচ্ছি। খেলাধুলার জন্য মাঠের পাশাপাশি বসুন্ধরার বেশ কয়েকটি স্টেডিয়াম ও স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ফাঁকা জায়গাগুলো উন্মুক্ত থাকবে। বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হবে এখানকার শিক্ষার্থীরা, যেমন স্পোর্টস ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, পরিবেশ ক্লাব, সাংস্কৃতিক ক্লাব ইত্যাদি। বিশাল আকারের পাঠাগার তৈরি করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস বাড়াতে সহায়ক হবে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে। আশপাশের যেকোনো এলাকা থেকে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে আসতে বেশ প্রশস্ত রাস্তার সুবিধা আছে। আমরা আশা করছি, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই আমাদের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা কার্যক্রম শুরুর কথা ভাবছি। বাংলা মাধ্যমে পাঠদান করা হবে, ইংরেজি ভার্সনও থাকবে। পর্যায়ক্রমে নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণির কার্যক্রম শুরু করব। একইভাবে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জেও আমরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু করব।

স্কুলটির ভবন ও চারপাশের পরিবেশ দেখে আসার পথেই কথা হয় শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই ব্লকে থাকেন দীর্ঘ আট বছর ধরে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো পদে চাকরি করেন। কার কাছে যেন আগেই শুনেছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শিগগিরই চালু হবে। খুবই আনন্দিত তিনি। বললেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অনেক ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু বাংলা মাধ্যমের একটি ভালো স্কুল অ্যান্ড কলেজের খুবই প্রয়োজন ছিল। মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে ভালো স্কুল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বসুন্ধরা গ্রুপ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা খুবই যুগোপযোগী। আমাদের মতো বহু মানুষের উপকার হবে বসুন্ধরা গ্রুপের এই স্কুলটি চালু হলে। সন্তানদের নিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাইরে কোনো স্কুলে যেতে কষ্ট হয় অনেক। আর ঢাকার রাস্তার জ্যাম তো আছেই। অনেক সময়ও নষ্ট হয়। এসব দুর্ভোগ কমে যাবে বসুন্ধরার স্কুলের কার্যক্রম শুরু হলে। ’

বসুন্ধরা গ্রুপ স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করছে। এ বিষয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শওকত আলম বলেন, “শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। দেশ এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষাক্ষেত্রে বসুন্ধরা গ্রুপ আসছে, এটা আমাদের জন্য একটি স্বস্তির সংবাদ। কারণ বসুন্ধরা গ্রুপ কোনো কাজ হাতে নিলে সেটাই সর্বোত্কৃষ্ট হয়। এই গ্রুপের চেয়ারম্যান যে কাজটি করেন, সেটি মানসম্পন্ন কাজ হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের স্লোগান ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’। দেশ ও মানুষকে যদি কিছু দিতে হয়, তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমরা চেষ্টা করে চলেছি যুগোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে সামনের দিনগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে। শিক্ষার্থীদের কিভাবে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া যায়, শিক্ষার আলো কীভাবে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, এই ভাবনা থেকে সরকার নতুন নতুন কারিকুলাম তৈরি করছে। এটি বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সোনার বাংলা গড়তে সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের নতুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ তৈরির সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। তাদের পরিচালিত নতুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারবে। শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা, খেলাধুলা ও শিক্ষার্থীদের মানবিক দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তারা গড়ে তুলবে, এটা আমি বিশ্বাস করি। নতুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রবেশ মানে একটি অমিত সম্ভাবনার দরজা খুলে যাওয়া। ”

আরও পড়ুন...

বসুন্ধরায় নান্দনিক শিক্ষাঙ্গন

news24bd.tv/আইএএম