কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নৃসংশভাবে খুন করা হয়েছে ইপিজেড কর্মী ফারজানা আক্তার প্রিয়া (২২)। শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে হত্যার ৩ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলো, বড়াইগ্রামের মেরিগাছা এলাকার মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. লকি উদ্দিন (৪২) ও একই গ্রামের মো. আব্দুল মমিনের ছেলে মো. বুলবুল আহম্মেদ (৩৫)। উপজেলার নগর ইউনিয়নের মেরিগাছা এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে এবং ঈশ্বরদী ইপিজেড এর শ্রমিক ফারজানা আকতার প্রিয়াকে শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে কুপিয়ে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন সহ হত্যার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ফারজানা আক্তার প্রিয়া পাবনা জেলার ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরি করেন। প্রতিদিন তিনি বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাতায়াত করতেন। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে একই এলাকার মো. লকি উদ্দিন প্রতিদিনই প্রিয়াকে উত্ত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) এর সমন্বয়ে পুলিশের একটি টিমের পরিকল্পনায় এবং তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ফোর্সদের সমন্বয়ে গঠিত টিম তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা এবং বিশ্বস্ত সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. লকি উদ্দিন ও মো. বুলবুল আহম্মেদকে মেরীগাছা গ্রাম থেকে ঘটনা ঘটার ৩ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার লকি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সামছুজোহা ও ফারজানা আক্তার পিয়ার প্রতিবেশী আব্দুস সালাম জানান, রংপুর এলাকার অনি নামে এক যুবকের সঙ্গে পিয়ার বিয়ে হয়েছিল। তাদের সংসারে একটি সন্তান রয়েছে। তবে পারিবারিক কলহের কারণে বেশ কিছুদিন থেকে প্রিয়া মেরিগাছা গ্রামের বাবার বাড়িতে থেকে ঈশ্বরদী ইপিজেডে কাজ করতেন। চার দিন আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় কাজ শেষ হলে তিনি ইপিজেড থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েন বাজারে বাস থেকে নেমে একটি ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানে চড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে মশিন্দা বিলের মাঝখানে চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তাকে জোরপূর্বক ভ্যান থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশসহ এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বিলের একটি পাটের ও ধানের জমির আইলে তার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে প্রিয়ার বাবা শহিদুল ইসলাম সহ পরিবারের লোকজন প্রিয়ার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক আবু সিদ্দিক বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আশা করছি দ্রুতই আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
news24bd.tvতৌহিদ