যে নরসুন্দরের জন্মদিনে বন্ধ থাকে সকল সেলুন!

৯৬ বছর ধরে নরসুন্দরের কাজ করছেন অ্যান্তোনিও ম্যানসিনেলি। ছবি: সংগৃহীত

যে নরসুন্দরের জন্মদিনে বন্ধ থাকে সকল সেলুন!

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

বর্তমানে তার বয়স ১০৭ বছর। মাত্র ১১ বছর বয়সে নরসুন্দরের কাজ শুরু করেন। সেই শুরু। এখনো সেই পেশাতেই আছেন।

টানা ৯৬ বছর। বয়স তাকে ঘরবন্দি করতে পারেনি। চোখেও ওঠেনি চশমা। মুখের সব দাঁত এখনও পুরোপুরি অক্ষত এবং কর্মক্ষম।
প্রায় শত বছরের কর্মজীবনে নিতে হয়নি অসুস্থতাজনিত ছুটি। যার কথা বলছি তার নাম অ্যান্তোনিও ম্যানসিনেলি। টানা ৯৬ বছর ধরে নিউইয়র্কের নিউ উইন্ডসরে নরসুন্দরের কাজ করে যাচ্ছেন এই মানুষটি।  

ইতালি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্কের এই মানুষটি এরইমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি পৃথিবীর প্রবীণ নরসুন্দর।

ম্যানসিনেলির জন্ম ১৯১১ সালে ইতালির নেপলসে। জীবনে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের নানা উত্থান-পতন দেখেছেন। দেখেছেন জার্মানির পতন। যুক্তরাষ্ট্রের উত্থান। মাত্র ৮ বছর বয়সে আমেরিকার নিউইয়র্কে অভিবাসী হওয়া পুরো পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য তিনি। ম্যানসিনেলির মতো আয়ু পাওয়া আর কোন সদস্য তার পরিবারে নেই। জীবিকার তাগিদে ১১ বছর বয়সে প্রথমে খণ্ডকালীন কাজ শুরু করেন স্থানীয় এক সেলুনে। পরে স্কুলে লেখাপড়া না করে ১২ বছর বয়সে সার্বক্ষণিক নরসুন্দর পেশায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। শুরুতে চুল কাটানোর জন্য মূল্য ধার্য ছিল মাত্র ২৫ সেন্ট। এই বয়সেও চুল-দাঁড়ি কাটতে শারীরিকভাবে কোন অসুবিধা বোধ করেন না ম্যানসিনেলি। যারা তার কাছে নিয়মিত চুল-দাঁড়ি কাটাতো তাদের অনেকেই আজ আর পৃথিবীতে নেই। অনেকের জন্ম দেখেছেন, চুল কেটেছেন, আবার তার মৃত্যুও দেখেছেন। এই বয়সেও কাস্টমারের অভাব নেই তার। উল্টো নতুন নতুন কাস্টমার নিয়মিত ভিড় করছেন ম্যানসিনেলির সেলুনে। এমনকি অন্যান্য দেশের লোকজনও যাচ্ছেন তার কাছে চুল-দাঁড়ি কাটাতে। সেলফি তুলছেন ম্যানসিনেলির সঙ্গে। কারণ একটাই, নিজের নামটা ইতিহাসের পাতায় রাখা। পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক নরসুন্দরের হাতে সেবা নেওয়ার অভিজ্ঞতা পরিচিতদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা।

১০৭ বছর বয়সেও সেলুনে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ হচ্ছে, ১৪ বছর আগে প্রিয়তমা স্ত্রী কারমিলার মৃত্যু। এরপর থেকে নিজেকে সব সময় কাজেই ব্যস্ত রাখতে চান তিনি। ম্যানসিনেলির প্রতি জন্মদিনে শহরের সব সেলুন বন্ধ থাকে। সবাই সেই জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নেয়।

দীর্ঘজীবী হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো গোপন সূত্র নেই বলে জানান ম্যানসিনেলি। ম্যানসিনেলি জানান, তিনি নিজের কাজ নিজে করেন। সীমিত খাদ্য গ্রহণ করেন। জীবনে কখনও ধূমপান বা অতিরিক্ত মদ্যপান করেননি। তথ্যসূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস

সম্পর্কিত খবর